আজকাল ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবার সকালে আচমকাই শহরের রাস্তায় সেনাবাহিনীর গাড়ি আটকাল পুলিশ। এদিন সকালে আচমকাই রাইটার্স বিল্ডিংয়ের সামনে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট-লালবাজার ক্রসিংয়ে সেনাবাহিনীর গাড়ি আটকায় কলকাতা পুলিশ। জানা গিয়েছে, ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পাসপোর্ট অফিস যাচ্ছিল সেনার গাড়িটি। সকাল ১১টা নাগাদ সেই গাড়ি আটকানো হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়, সেনার গাড়িটি ওভারস্পিডিং করছিল। পাল্টা সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়, গাড়ির স্পিড বেশি ছিল না। ওভারস্পিডিংয়ের অভিযোগ ভুল। ট্রাফিক পুলিশের তরফে অভিযোগ জানানো হয়, ক্রসিংয়ে সেনার গাড়িটি বিপজ্জনক ভাবে টার্ন নেয়। পিছনে কলকাতা পুলিশের সিপি মনোজ ভার্মার কনভয়ও ছিল বলে জানানো হয়। সেনাকর্মী জানান, তাদের গাড়ির পিছনে যে সিপির কনভয় ছিল সেটা তারা জানতেন না। খবর দেওয়া হয় হেয়ার স্ট্রিট থানায়।
এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সেনা আধিকারিক। তাঁর সঙ্গে কথা হয় হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশের। ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, লালবাজার সংলগ্ন মহাকরণের রাস্তা দিয়ে আসছিল সেনাবাহিনীর গাড়িটি। ঠিক তার পিছনে ছিল একটি কালো গাড়ি। পুলিশের বক্তব্য, সেটি সিপি মনোজ ভার্মার কনভয়। ক্রসিং থেকে হঠাৎই ডানদিকে মোড় নিতে যায় সেনার ট্রাকটি। কোনওরকমে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যায় গাড়িটি। তারপরেই ছুটে আসে পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য, ওই ক্রসিং থেকে ডানদিকে যাওয়ার নিয়ম নেই। লেন ভেঙে ডানদিকে ঘুরতে যাচ্ছিল ট্রাকটি। সামান্য এদিক থেকে ওদিক হলেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। এরপরেই ট্রাকটিকে আটকানো হলে সেনাকর্মীরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খবর দেন।
গাড়িটিকে রাখা হয় ডেকার্স লেনের সামনে। হেয়ার স্ট্রিট থানায় পৌঁছন সেনা আধিকারিক। উল্লেখ্য, সোমবার সেনাবাহিনীর তরফে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ খুলে ফেলা হচ্ছিল। দেশের নানা রাজ্যে ক্রমাগত হেনস্থার শিকার বাংলাভাষীরা। ক্রমাগত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার, বাংলা ভাষার উপর অবমানায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবাদের রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছিলেন। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে শনি রবিবার প্রতিবাদ সভা করা হয়ে থাকে। সেই মঞ্চ খুলে ফেলার খবর মিলতেই সেখানে পৌঁছন মমতা ব্যানার্জি। বলেন, 'ধর্না চলবেই।' তারজন্য পথ বাতলে দেন তিনি নিজেই। মমতা বলেন, 'সেনাকে যখন বিজেপির কথায় চলতে হয়, তখন দেশটা কোথায় যায়, সন্দেহ জাগে।'
ভাষা আন্দোলনের অনুষ্ঠান মূলত হয় শনি-রবিবার। রাস্তা বন্ধ করে হয় না তা, সেসব উল্লেখ করেই মমতা জানান, অনুমতি নেওয়া ছিল।মমতা বলেন, বাংলার মানুষ, আরও বেশি করে বাংলায় কথা বলুন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে। আরও জোরদার হবে। আজকে যে ঘটনা ঘটিয়েছে বিজেপি, তার বিরুদ্ধে আগামী কাল বেলা দুটো থেকে চারটে সব ব্লকে ব্লকে, জেলায় জেলায়, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে, পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে ভাষা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, তৃণমূলের মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে কর্মসূচি চলবে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই রানি রাসমণি রোডে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ কর্মসূচি। তবে এর পাশাপাশি, বেশ কিছু প্রশ্নও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।