‘কবে শেষ হবে তদন্ত?’, নিয়োগ মামলায় সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ হাই কোর্টের
প্রতিদিন | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গোবিন্দ রায়: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করছে সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এসএসসি মামলার পাশাপাশি প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তভারও এই দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতেই আছে। সেই সমস্ত মামলার শুনানিতে তদন্ত কবে শেষ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর পর্যবেক্ষণ, ”তদন্ত কবে শেষ হবে কেউই আমরা জানি না”।
একই সঙ্গে বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, ”ধরে নেওয়া যাক যে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। যারা ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করেছে তারাও যে ওই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, সেটা কিভাবে প্রমান করা যাবে?”
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। মামলার শুনানিতে বিচারপরতির পর্যবেক্ষণে মামলাকারীর আইনজীবী কুমারজ্যোতি তেওয়ারি বলেন, ”এরা সুবিধাভোগী।” তবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্যানেল প্রকাশের ক্ষেত্রে নিয়ম মানেনি বলে এদিন আদালতে জানান আরও এক মামলাকারী আইনজীবী সৌম্য মজুমদার। তবে এক্ষেত্রে প্যানেল প্রকাশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও বিধি কিংবা পদ্ধতি আছে কিনা তা জানতে চান বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী।
যদিও এক্ষেত্রে মামলাকারী আইনজীবী আদালতকে জানান, ”এ ব্যাপারে বিধিতে নির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ নেই।” এরপরেই পালটা বিচারপতি আরও পর্যবেক্ষণ, ”তার মানে পর্ষদ নিজের পছন্দ অনুযায়ী পদ্ধতিতে প্যানেল প্রকাশ করতে পারে।” প্রত্যুত্তরে আইনজীবী জানান, ”যদি প্যানেল প্রকাশের কথা বিধিতে নাও বলা থাকে তাহলেও প্যানেল প্রকাশ করতে হবে।”
শুধু তাই নয়, ”প্রশিক্ষিত এবং অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের জন্য আলাদা করে প্যানেল না তৈরি করা না হয় তাহলে কীভাবে প্রশিক্ষিতরা অগ্রাধিকার পাবেন?” তা নিয়েও এদিন শুনানিতে তুলে ধরেন মামলাকারীর আইনজীবী। এক্ষেত্রে বিচারপতির মন্তব্য, ”একটাই নিয়োগ প্রক্রিয়া। যদি কোনও Aptittude Test না হয়ে থাকে তাহলে সেটা প্রশিক্ষিত এবং অপ্রশিক্ষিত কারওর ক্ষেত্রেই হয়নি। তাহলে এখন আদালত কি করবে?”
শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে বিচারপতি চক্রবর্তীর আরও পর্যবেক্ষণ, ”এখন যদি আদালত ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীর চাকরি বাতিল করা হয় তাহলে বাকি প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের কি ছেড়ে দেওয়া হবে? কারণ তারা তো একই নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ। তাদেরও তো তাহলে মামলায় যুক্ত করে বক্তব্য শোনা দরকার।” এক্ষেত্রে প্যানেল পুনর্গঠন করে প্রকাশের দাবি জানান মামলাকারী আইনজীবী।
যদিও তা কতটা সম্ভব? তা নিয়ে পালটা প্রশ্ন করেন বিচারপতি। বিশেষ করে ১ লাখ ২৫ হাজার আবেদনকারী, ৪২ হাজার চাকরিপ্রাপক এবং তাঁদের পরিবার নিয়ে রিতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতি। একই সঙ্গে এর সমাধান কি তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।