• ১১ বছরে ৫৬ কোটি জনধন অ্যাকাউন্ট চালুর দাবি নির্মলার, উল্লেখ নেই অচল ১৪ কোটির
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মোদি সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার আগে পূর্বতন কোনও সরকার গরিব দেশবাসীর কাছে ব্যাঙ্কের দরজা এভাবে খুলে দেয়নি। ব্যাঙ্ক পরিষেবাকে মানুষের কাছে নিয়ে গিয়েছে মোদি সরকার। মঙ্গলবার চেন্নাইয়ের এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এই সাফল্যের কথা শোনালেন। জানালেন, বিগত ১১ বছরে ৫৬ কোটির বেশি জনধন অ্যাকাউন্ট চালু হয়েছে। যে অ্যাকাউন্ট প্রধানত গরিবদের জন্য চালু হয়েছে। এই প্রবণতা থেকেই প্রমাণিত যে দেশের অর্থনীতিও ক্রমেই উত্তরণের পথে যাচ্ছে। সীতারামনের এই দাবি নিয়ে অর্থনৈতিক মহলেই প্রশ্ন উঠছে। কারণ, যে জনধন অ্যাকাউন্টকে গরিবের আর্থিক ক্ষমতায়নের প্রমাণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া মোদি সরকার ও অর্থমন্ত্রক, সেই মন্ত্রকেরই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৫৬ কোটির মধ্যে প্রায় ১৪ কোটি জনধন অ্যাকাউন্ট আদতে লেনদেনহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর। এর সিংহভাগই ডরম্যান্ট। অর্থাৎ টাকা তোলা ও জমা দেওয়া তো হয়ইনি, কেওয়াইসি জমা দেওয়ারও কোনও আগ্রহ দেখায়নি গ্রাহকরা। বস্তুত ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় শুধুমাত্র জনধন অ্যাকাউন্টেরই ১৪ কোটি যদি অচল হয়ে পড়ে থাকে, সেটি প্রত্যেক ব্যাঙ্কের পক্ষেই সমস্যা। কারণ অ্যাকাউন্ট থাকা মানেই তার ডেটা সংরক্ষণ রাখতে হয়।

    ব্যাঙ্ক কর্তারাও দাবি করেছিলেন, যেসব জনধন অ্যাকাউন্টে কোনও লেনদেন হয় না এবং বহুবার বলা সত্ত্বেও গ্রাহকদের কোনও আগ্রহ নেই সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কিন্তু সরকার ওই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে। কারণএই বিপুল পরিমাণ অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার অর্থ দেশে জনধন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমে যাওয়া। যা প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থতার বার্তা দেবে। জনধন অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বাড়ছে এই প্রচার ইতিবাচক। যেমন মঙ্গলবারই অর্থমন্ত্রী ৫৬ কোটি অ্যাকাউন্টের কৃতিত্ব দিয়েছেন সরকারকে। 

    জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ব্যাঙ্কগুলিকে জানিয়েছিল তিন মাস ধরে একটি অভিযান চালাতে হবে। ৩০ সেপ্টেম্বর সেই অভিযান সমাপ্ত হবে। নির্দেশিকা ছিল, এই অচল হয়ে থাকা অ্যাকাউন্ট গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। দরকার হলে বাড়ি বাড়ি যাওয়া হবে। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে যে, কেন তারা অ্যাকাউন্ট চালু রাখছে না। বহু ক্ষেত্রেই সঞ্চয় কিংবা জমানোর মতোই টাকাই নেই বলে শুনতে হচ্ছে। যে অ্যাকাউন্টগুলি সচল রয়েছে, সেগুলির মধ্যেও বহু অ্যাকাউন্ট চলছে একমাত্র ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের টাকা আসছে বলে।
  • Link to this news (বর্তমান)