নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: রেশন বেচে নেশা! জলপাইগুড়ির স্টেশন রোডে হাতেনাতে পাকড়াও যুবক। জুটল গণধোলাই। পরে তুলে দেওয়া হল পুলিসের হাতে। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়।
অভিযোগ, জলপাইগুড়ি শহরের পিলখানা কলোনি এলাকার এক যুবক বিনামূল্যে পাওয়া সরকারি রেশন বিক্রি করে স্টেশন চত্বরে মাদক কিনতে আসে। গত কয়েকদিন ধরে ওই এলাকার বাসিন্দারা মাদকের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন। ফলে তাঁরা তক্কে তক্কে ছিলেন। দু’শো টাকায় বাড়ির রেশন বিক্রি করে স্টেশন চত্বরে একটি নেশার ঠেকে মাদক কিনতে ঢোকামাত্র ওই যুবককে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এলাকার বাসিন্দারা। শুরু হয় উত্তমমধ্যম। স্থানীয়দের দাবি, ওই যুবকের সঙ্গে আরও দু’জন ছিল। তাড়া খেয়ে তারা পালায়।
বাসিন্দাদের চাপের মুখে পাকড়াও হওয়া যুবক স্বীকার করে নেয়, বাড়ির তিন সদস্যের রেশন বিক্রি করে দু’শো টাকা পায় সে। ওই টাকা দিয়ে এদিন স্টেশন চত্বরে মাদক কিনতে এসেছিল।
জলপাইগুড়ি শহরের যুব তৃণমূল নেতা অজয় শা বলেন, স্টেশন চত্বর মাদকের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছিল। গত কয়েকদিন ধরে এলাকার বাসিন্দারা মাদকের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন। পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে ৬০ জনের টিম তৈরি করা হয়েছে। ওই টিমের সদস্যরা পালা করে দিনে ও রাতে এলাকায় পাহারা দিচ্ছেন। কোথাও মাদক কেনাবেচা হতে দেখলেই হাতেনাতে পাকড়াও করা হবে। তাঁর দাবি, পুলিস প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়েই আমরা মাদকের বিরুদ্ধে অলআউট অভিযান চাইছি। যদিও মাদকের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দাদের রাস্তায় নামা নিয়ে পুলিস আধিকারিকরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন, আমরা মাদকের বিরুদ্ধে সবসময়ই পদক্ষেপ করে থাকি। তবে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ কিংবা বমাল পাকড়াও করতে না পারলে তাকে মাদক কারবারি হিসেবে গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে অবশ্যই বাসিন্দাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। কিন্তু তাঁরা নিজেরা যাতে আইন হাতে তুলে না নেন, সেই আবেদন রাখা হচ্ছে। এলাকায় মাদকের রমরমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাতে গত শনিবার রাতে কোতোয়ালি থানায় আসেন খোদ জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল। তাঁর সঙ্গে সেদিন থানায় এসেছিলেন কয়েকশো বাসিন্দা। এরপর থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি শহরে মাদকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা। পুলিসও ধরপাকড়ে জোর দিয়েছে। - নিজস্ব চিত্র।