• শিলিগুড়িতেও এবার ‘সম্প্রীতি যাত্রা’, উদ্যোগী নিগম - মন্দির, মসজিদ, গির্জার তালিকা প্রস্তুত
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির পর শিলিগুড়ি। মন্দির, মসজিদ ও গির্জা, এই তিনটি ধর্মীয় স্থান নিয়ে সম্প্রীতির যাত্রা শুরু করছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। তারা এ ব্যাপারে প্রস্তুত। বিশ্বকর্মা পুজোর পর তারা উত্তরের বাণিজ্যনগরীতে এই প্যাকেজ লঞ্চ করবে। সোমবার এমন পরিকল্পনার কথা জানান এনবিএসটিসি’র চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়। পুজোর মুখে এনিয়ে আগ্রহী ট্যুর অপারেটাররা। তাঁদের প্রত্যাশা, সরকারি পরিবহণ সংস্থার এমন উদ্যোগে এখানকার তীর্থস্থান নির্ভর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবার। 

    নদী, পাহাড়, চা বাগান ও জঙ্গল ঘেরা উত্তরবঙ্গে ছড়িয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক বহু স্থান। সেগুলির মধ্যে মন্দির, মসজিদ ও গির্জা অন্যতম। সেগুলির কোনওটি স্বাধীনতা সংগ্রামের, আবার কোনওটি রাজ আমলের ইতিহাস বহন করে চলেছে। ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় সেই স্থানগুলি নিয়ে সম্প্রীতির যাত্রা শুরু করেছে এনবিএসটিসি। নিগম সূত্রের খবর, মাস খানেক আগে জলপাইগুড়িতে এই প্রকল্প চালু করা হয়। দু’টি ট্রিপ হয়েছে। মাথাপিছু ভ্রমণের খরচ ৯০০ টাকা। তাতে লাঞ্চও রয়েছে। এবার সেই একই কায়দায় শিলিগুড়িতেও এমন প্যাকেজ ট্যুরের সূচনা করতে চলেছে সরকারি পরিবহণ সংস্থা। 

    নিগমের চেয়ারম্যান বলেন, ওই জেলাগুলিতে সম্প্রীতির যাত্রা নিয়ে ভালো সাড়া মিলেছে। শিলিগুড়িতেও সেই প্রকল্প চালুর দাবি উঠেছে। এজন্য, সংশ্লিষ্ট শহর ও আশপাশের মন্দির, মসজিদ ও গির্জার তালিকা করা হচ্ছে। বিশ্বকর্মা পুজোর পর প্রকল্পটি চালু করা হবে। 

    রাজ্যের অন্যতম বৈচিত্রপূর্ণ জেলা দার্জিলিং। এর একাংশ পাহাড়। আরএকাংশ সমতল, যা শিলিগুড়ি। দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা অংশ নিয়ে গঠিত এই শহরের বয়স ৭৫ বছরের বেশি। মহানন্দা সহ বিভিন্ন নদী ও চা বাগান বেষ্টিত এই তরাই ভূমিতে ছড়িয়ে আছে দর্শনীয় মন্দির, মসজিদ ও গির্জা। নিগম সূত্রে খবর, শহরের মহাবীরস্থানে অবস্থিত আনন্দময়ী কালীবাড়ি। শতবর্ষ প্রাচীন এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়েছে রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। এই মন্দির ছিল বিপ্লবীদের ডেরা। এর সঙ্গে চারণ কবি মুকুন্দ দাসের স্মৃতি জড়িত। এই মন্দির, সফদর হাসমি চকের মসজিদ, সেভক কালীবাড়ি, ভক্তিনগরের বৌদ্ধগুম্ফা, ১০ নম্বর ওয়ার্ড ও নিবেদিতা রোডের চার্চ, ইসকন মন্দির, ঘোগোমালির জগৎবন্ধু আশ্রাম, বর্ধমান রোডের গৌড়ীয়মঠ প্রভৃতি স্থান নিয়ে প্যাকেজ ট্যুর সাজানো হচ্ছে। 

    নিগমের চেয়ারম্যান বলেন, এতে পর্যটন শিল্পের যেমন বিকাশ ঘটবে, তেমনই নিগমের আয়ও বাড়বে। পর্যাক্রমে প্রতিটি শহরেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হবে। 

    সরকারি পরিবহণ নিগমের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ট্যুর অপারেটররা। শিলিগুড়ির পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট সান্যাল বলেন, জলপাইগুড়িতে সম্প্রীতি যাত্রায় জেলা প্রশাসন ও এনবিএসটিসি’কে সবরকমভাবে সহযোগিতা করছি। সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে শিলিগুড়িতেও নিগমকে সহযোগিতা করব। পর্যটন শিল্পের বিকাশের তাদের এই ইতিবাচক পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় ট্যুর অপারেটারদের সঙ্গে এনবিএসটিসি’র আলোচনা করা উচিত। তা হলে তাদের উদ্যোগ আরও জনপ্রিয় হবে। কিছু গাইডের কর্মসংস্থানও হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)