মাছের আঁশ দিয়ে দুর্গামূর্তি তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন কেশপুরের মহিলারা
বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কেশপুর: মাছের আঁশ নিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে তাক লাগিয়েছেন কেশপুর ব্লকের মহিলারা। তাঁদের হাতের কাজে মুগ্ধ সাধারণ মানুষ। ছবিটা কেশপুরের উত্তরপাড়ার। এখানকার বাসিন্দাদের কথায়, গ্রামের বেশকিছু মহিলা আঁশ দিয়ে নানা জিনিস তৈরি করছেন। সেইসব জিনিস বিভিন্ন মেলায় বিক্রি হচ্ছে। আঁশ দিয়ে তৈরি জিনিস বিক্রি হওয়ায় উপার্জন হচ্ছে তাঁদের। শিল্পীদের কথায়, আঁশ ব্যবহার করে নানা জিনিস তৈরির প্রশিক্ষণ দেয় প্রশাসন। সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ফিরে মাছের আঁশ ব্যবহার করে নানা জিনিস তৈরি করা শুরু করি। ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন মেলায় ও প্রদর্শনীতে আঁশের তৈরি জিনিস বিক্রি হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার আঁশ দিয়ে দুর্গা মায়ের প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে।
এদিন অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক মিশন ডিরেক্টর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক (কৃষি) গোবিন্দ হালদার বলেন, সারা বছর ধরেই মহিলারা বিভিন্ন জিনিস তৈরি করেছেন। জেলার মহিলাদের হাতের কাজ দেখে সকলেই মুগ্ধ। আগামী দিনে মহিলাদের নানা ভাবে সহযোগিতা করা হবে। জেলার একশো শতাংশ মহিলাকে স্বনির্ভর করে তোলাই প্রধান লক্ষ্য। জানা গিয়েছে, কেশপুর ব্লকের উত্তরপাড়ার মহিলারা নিয়মিত বাজারে গিয়ে কাতলা মাছের আঁশ জোগাড় করেছেন। অন্য মাছের আঁশ দিয়ে একাজ করা সম্ভব নয়। এরপর সেই আঁশকে পরিষ্কার করার জন্য অ্যাসিড দিয়ে ধোয়া হয়। তারপর আঁশগুলোকে বড় পাত্রে গুঁড়ো সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলেন মহিলারা। ভিজে থাকা আঁশ একদম হালকা রোদে শুকনো করা হয়। শুকনো আঁশ শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষে নেওয়া হয়। এতে আঁশ মসৃণ হয়ে যায়। সেই আঁশ কাঁচি দিয়ে কেটে নানা জিনিস তৈরি হয়। মাছের আঁশ ব্যবহার করে তৈরি জিনিস দু›শো টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার চাইছে জেলায় জেলায় মহিলাদের স্বনির্ভর করতে। সেইমতো জেলার মহিলাদের নানা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় প্রশাসনের উদ্যোগে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মহিলাদের স্বনির্ভর করার বার্তা দিয়েছেন। রাজ্য সরকারও চাইছে জেলার হস্তশিল্পের বিকাশ করতে। সেই কথা মাথায় রেখেই কেশপুর ব্লকের মহিলাদের মাছের আঁশ ব্যবহার করে বিভিন্ন জিনিস তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এদিন কথা হচ্ছিল শিল্পী কাবেরী ফৌজদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, দুর্গা মা আসছেন। তাই আঁশ ব্যবহার করে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছি। আঁশের তৈরি দুর্গা প্রতিমার উচ্চতা দেড় ফুটের মতো। দুর্গা প্রতিমার সাজসজ্জা তৈরি হয়েছে পুঁতি দিয়ে।