• চুরি যাওয়া ৩টি ল্যাপারোস্কোপিক যন্ত্র উদ্ধার হলেও ফেরত মেলেনি
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ডোমকল: ১৭জুলাই ডোমকল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার থেকে তিনটি ল্যাপারোস্কোপিক যন্ত্র চুরি গিয়েছিল। এরপর প্রায় দেড়মাস কেটে গিয়েছে। চুরির কিনারা হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই তিনটি যন্ত্র এখনও হাতে পায়নি। অন্য যন্ত্রও পাঠানো হয়নি। ফলে পরিবার পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ লাইগেশন সার্জারি মুখ থুবড়ে পড়েছে।

    তবে বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে চাইছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার কৌশিক আদিত্যকে ফোন করা হলে তিনি একপ্রকার মেজাজ হারান। তিনি বলেন, আমি মিডিয়ার মুখপাত্র নই। যা জানার, সিএমওএইচের থেকে জানতে হবে। মুর্শিদাবাদের সিএমওএইচ সন্দীপ সান্যাল ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

    হাসপাতালের বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, বিকল্প হিসেবে ‘মিনি ল্যাপ লাইগেশন’ চালু থাকলেও বেশিরভাগ মানুষই তা করাতে চাইছেন না। চিকিৎসকরা জানান, মিনি ল্যাপ প্রক্রিয়ায় পেট কেটে ফ্যালোপিয়ান টিউব বাঁধা হয়। এতে কাটাছেঁড়া বেশি হওয়ায় ব্যথা ও অসুবিধা তুলনামূলকভাবে বেশি। ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতি ‘মিনিমালি ইনভেসিভ’। এতে সময় ও ব্যথা দুটোই কম লাগে। শরীরে বড় কোনও দাগ পড়ে না। সেজন্য মহিলারা এই পদ্ধতিই বেশি পছন্দ করেন।

    মহিলাদের লাইগেশনে উৎসাহ দিতে বিশেষ ইনসেনটিভ প্রকল্প চালু হয়েছে। আশাকর্মীরা কাউকে লাইগেশনের জন্য রাজি করালে এই প্রকল্পে টাকা পান। কিন্তু যন্ত্র না থাকায় ডোমকল সুপারস্পেশালিটিতে ল্যাপারোস্কোপিক লাইগেশন বন্ধ আছে। মহিলারা মিনি ল্যাপ লাইগেশন করাতে চাইছেন না। ফলে জন্মনিয়ন্ত্রণ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।

    সূত্রের খবর, কয়েকমাস আগে প্রতি সপ্তাহে হাসপাতালে ৫০-এর কাছাকাছি মহিলা লাইগেশন করাতেন। সেখানে গত কয়েকসপ্তাহে সেই সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকজনে নেমে এসেছে। মহকুমার একটি ব্লকে মে থেকে জুলাই অবধি তিনমাসে ৩০জন মহিলা লাইগেশন করান। কিন্তু আগস্ট মাসে মিনি ল্যাপ পদ্ধতিতে আর একজনও লাইগেশন করাতে রাজি হননি।

    ১৭ জুলাই তিনটি যন্ত্র চুরি গিয়েছিল। কিন্তু তার কয়েকসপ্তাহ পরই বাঁকুড়া জেলা পুলিস অন্য একটি হাসপাতালে চুরির ঘটনায় সোনারপুর থেকে ওই চোরকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে ডোমকলে চুরি যাওয়া যন্ত্রগুলিও উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু সেগুলি এখনও ফেরত পাওয়া যায়নি।

    ডোমকলের এসডিপিও শুভম বাজাজ বলেন, চুরি যাওয়া তিনটি যন্ত্র আমরা পেয়ে গিয়েছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আদালতে আবেদন করলে নির্দেশ অনুসারে আমরা সেগুলি তাদের হাতে তুলে দেব। এক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ার জন্য কিছুটা সময় লাগে। আমরা ওঁদের বিষয়টি বুঝিয়ে দিয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)