কুলটি শ্যুটআউট কাণ্ডে মূলচক্রী গ্রেপ্তার হলেও এখনও খোঁজ নেই শার্প শ্যুটারদের
বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: কুলটি শ্যুটআউট কাণ্ডে পুরসভার কর্মীকে খুনের ছক কষেছিল তাঁর খুড়তুতো ভাই-বোনই। পুলিস জানতে পেরেছে, মৃত জাভেদ বারিকদের জলপাইগুড়িতে যে সম্পত্তি রয়েছে, তা কয়েকশো কোটি টাকার। সেই সম্পত্তি ভুয়ো নথি বানিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল তাঁর খুড়তুতো বোন ফারহা নাজ। জাভেদরা তা জানতে পেরে মামলা করেন। সম্পত্তি বিক্রির প্রক্রিয়া থমকে যায়। ক্রেতারা এবার পাল্টা ফারদাকে চাপ দিতে থাকে। সেই ক্ষোভ থেকেই জাভেদকে শার্প শ্যুটার দিয়ে খুন করায় বোন। মাস্টারমাইন্ড ফারহাকে পুলিস ধরতে পারলেও এখনও অধরা শার্প শ্যুটাররা। কতটাকা সুপারি দিয়ে তারা শার্পশ্যুটার এনেছিল তাও স্পষ্ট নয়। তাদের হদিশ পেতেই ফারহা ও তার গাড়ির চালক ফয়জলকে আসানসোল আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানায় পুলিস। বিচারক দুই অভিযুক্তকেই ছ’দিনের জন্য পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে, ঘটনার অকাট্য প্রমাণ জোগাড় করতে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার কুলটি থানার নিয়ামতপুরে ঘটনাস্থল থেকে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা।
ডিসি সন্দীপ কাররা বলেন, নকল জমি মালিক সেজে আগেই ফারহা জাভেদদের জমি বিক্রি করে দিয়েছিল বিপুল অর্থের বিনিময়ে। তারপরই জাভেদরা জমি বিক্রি করতে না চাওয়ায় ক্রেতারা অভিযুক্তকে চাপ দিতে থাকে। এরপরই জাভেদকে খুনের পরিকল্পনা করে তারা। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে শ্যুটারদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে পান খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন আসানসোল পুরসভার অস্থায়ী কর্মী জাভেদ বারিক। সেই খুনের ঘটনায় প্রথম তাঁর খুড়তুতো ভাই ইন্তেখাব আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। পরে পুলিস নিশ্চিত হয় পুরো ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তার বোন ফারহা ও তার স্বামী আসিফ। এরপরই ফারহাকে জলপাইগুড়ি থেকে চালক সহ গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিস জানতে পেরেছে, জাভেদের বাবা এখানে স্কুল শিক্ষক ছিলেন। বহু বছর আগে সেই শিক্ষকতার টাকা জমিয়ে তিনি জলপাইগুড়িতে সস্তায় জমি কিনে রাখেন। কিছু জমি তিনি কিনেছিলেন বোনের নামেও। জলপাইগুড়িতেই ছিল তাঁদের আদি বাড়ি। সেই জমিই এখন আকাশছোঁয়া দাম। যা নিয়েই বিবাদের সূত্রপাত। পুলিস বাকি ঘটনাক্রম জানতে পারলেও শ্যুটারদের হদিশ পায়নি। তাদের গ্রেপ্তার করে পুরো মামলার কিনারা করতে চায় তাঁরা। ঘটনার চারদিন পরও তারা অধরা। - ধৃত মূলচক্রী।