বানভাসি এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঘর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু
বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফরে এসে বানবাসি এলাকার বাসিন্দাদের আলাদাভাবে বাড়ি তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। এখনও তার একমাসও কাটেনি। তার আগেই ডিভিসি বা বৃষ্টির জলে ভেঙে যাওয়া বাড়ি নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করে দিল সরকার। প্রতিটি জেলা থেকে ভেঙে যাওয়া বাড়ির তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলায় অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসির ছাড়া জলে ৪০৩টি বাড়ি ভেপে গিয়েছিল। ৫৮০টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা পাঠানো হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রতিটি জেলার উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। যাঁদের পাকাবাড়ি নেই, তাঁরাই এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। তবে প্রথম ধাপে সবাই বাড়ি তৈরির টাকা পাচ্ছেন না। ধাপেধাপে টাকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে ভারী বৃষ্টি এবং ডিভিসির জলে পূর্ব বর্ধমান, হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ে। অন্যান্য জেলাগুলিতেও বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জন্য আলাদা প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। জেলা প্রশাসন একাধিকবার সমীক্ষা করে তালিকা তৈরি করে নবান্নে পাঠিয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনও আলাদাভাবে ২০০টি পরিবারকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলা পরিষদের আধিকারিকরা সমীক্ষা করে তালিকা তৈরি করেছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনা প্রকল্পে টাকা বন্ধ করে রেখেছে। জেলায় উপভোক্তাদের তালিকা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দেয়নি। তারপরই রাজ্য সরকার ওই পরিবারগুলিকে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য ছাড়াই বিভিন্ন জেলায় পাকাবাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। কয়েক দিন আগে জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার শুধু আবাস যোজনা নয়, মোট পাঁচটি প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে রেখেছে। তারপরও উন্নয়ন থমকে নেই।
এক আধিকারিক বলেন, টানা বৃষ্টিতে পূর্ব বর্ধমানের রায়না-২, জামালপুর এলাকায় বেশি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হুগলির খানাকুলেও বহু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া পশ্চিম বর্ধমানেও মাটির বাড়ি ভেঙে যায়। ওই সমস্ত এলাকায় চাষের জমিও নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কৃষিদপ্তর বিনামূল্যে চাষিদের ধানের চারা বিতরণ করে। সেই করণে প্রায় সমস্ত জমিতেই ধান রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। এবার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা নতুন বাড়িও পেতে চলেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে তাঁদের অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম ধপের টাকা ঢুকতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পর এই প্রকল্পের তোড়জোড় শুরু হয়ে যাওয়ায় খুশি বানভাসি এলাকার বাসিন্দারা।