• ‘বর্তমান’-এর খবরের জের, দ্রুত চালু হচ্ছে দুর্লভপুর ট্রাফিক ফাঁড়ি
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: গঙ্গাজলঘাটি থানার দুর্লভপুরে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক। যার ফল দুর্ঘটনা! গঙ্গাজলঘাটি থানা ও বাঁকুড়া জেলা পুলিসের কর্তারা সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হওয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। এবার দুর্লভপুরের জন্য পৃথক ট্রাফিক ফাঁড়ি চালু করতে চলেছে বাঁকুড়া জেলা পুলিস। ওই এলাকার সমস্যা নিয়ে ‘বর্তমান’ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। চাপে পড়ে পুলিস কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেয়। উল্লেখ্য, দুর্লভপুরেই ডিভিসি-র মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। ওই এলাকায় সিমেন্ট সহ অন্যান্য কয়েকটি কারখানাও রয়েছে। সেখান থেকে বের হওয়া ট্রাকগুলিও রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকে। ছাই, কয়লার গুঁড়ো ও ধুলো উড়িয়ে ট্রাকগুলি বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। তার ফলেও এলাকাবাসী ও পথচারীদের সমস্যা হয়। বিজেপি-র তরফে ওই ঘটনার প্রতিবাদে কিছুদিন আগে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখানো হয়। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে বিজেপির আন্দোলন নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে চর্চা হয়। তবে ওই আন্দোলনের আগেই ট্রাফিক ফাঁড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বাঁকুড়ার পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, বর্তমানে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর সহ জেলায় মোট পাঁচটি ট্রাফিক ফাঁড়ি রয়েছে। দুর্লভপুর ও সোনামুখীতে নতুন দু’টি ট্রাফিক ফাঁড়ি চালু হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই ‘ট্রায়াল রান’ শুরু হয়েছে। পুলিস কর্মী-আধিকারিকদের সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। ফাঁড়ির অফিসের শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে। বাঁকুড়া জেলা ট্রাফিক পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, জাতীয় ও রাজ্য সড়কের উপর যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখা আইনত দণ্ডনীয়। সড়ক থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে চালকদের ট্রাক, লরি রাখতে হবে। সড়ক সংলগ্ন ধাবা, হোটেলের সামনে পণ্যবাহী যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখার জন্য জায়গা ছেড়ে রাখতে হবে। চালকরা খাওয়াদাওয়া বা বিশ্রাম নিতে যাওয়ার আগে সেখানে যাতে যানবাহনগুলি দাঁড় করিয়ে রাখতে পারেন, তারজন্যই ওই জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা অনুপ কর্মকার বলেন, আমি বাইক নিয়ে দৈনিক বাড়ি থেকে রানিগঞ্জ যাতায়াত করি। শহর সংলগ্ন হেভির মোড় ও দুর্লভপুরে প্রায়ই দিনই জাতীয় সড়কের উপর ট্রাকের লম্বা লাইন দেখি। বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহনকে রাস্তা ছাড়তে চরম সমস্যা হয়। যে কোনওদিন দুর্ঘটনা হতে পারে। চারচাকার গাড়ি চালকদেরও একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। উল্লেখ্য, কলকারখানা থাকায় দুর্লভপুরে ট্রাকের ব্যবসা বেশ লাভজনক। ফলে অনেকেই ট্রাক ভাড়ায় খাটিয়ে থাকেন। ট্রাক, ডাম্পার কিনলেও সেসব রাখার জায়গা বেশিরভাগ মালিকেরই নেই। তাঁরা সেগুলি জাতীয় সড়কের উপরে দাঁড় করিয়ে রাখেন। ট্রাকের অর্ধেক জাতীয় সড়কের উপরে থাকে। বাকি অংশ রাস্তার পাশের মাটিতে থাকে। কোনও কোনও সময় সম্পূর্ণ ট্রাক জাতীয় সড়কের এক লেন দখল করে রাখা হয়। দুর্লভপুরে জাতীয় সড়কের পাশেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীর থাকায় চালকদের সমস্যা হয়। তার উপর সারিবদ্ধ ট্রাক, ডাম্পারের জেরে যানজট মারাত্মক আকার ধারণ করে। ট্রাফিক ফাঁড়ি পুরোদমে চালু হলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে বলে অনেকেই আশা করছেন।   
  • Link to this news (বর্তমান)