• বাঁকুড়ায় ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, চরম ভোগান্তি
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ায় গত কয়েকদিন ধরে ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। বেশিরভাগ দিনই সকালে লোডশেডিং হচ্ছে বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। বিকেলেও মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে বলে স্থানীয়দের দাবি। ফলে বাঁকুড়া শহর ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তি হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে গরমে এমনিতেই জেলাবাসীর হাঁসফাঁস অবস্থা। তারউপর এই লোডশেডিংয়ের জেরে সমস্যা আরও বেড়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তর অবশ্য ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের অভিযোগ মানতে চায়নি।

    বিদ্যুৎ দপ্তরের বাঁকুড়া রিজিয়নের এক আধিকারিক বলেন, পুজোর আগে প্রতিবছরই বিদ্যুৎবাহী তারের উপরে বা নীচে থাকা গাছের ডালপালা ছেঁটে ফেলার কাজ চলে। এবারও তা করা হচ্ছে। সেই কারণে সকালের দিকে দেড়-দু’ঘণ্টা করে ‘পাওয়ার কাট’ করা হচ্ছে। তবে একই এলাকায় আমরা টানা কাজ করছি না। তার বদলে এক সপ্তাহ অন্তর কাজ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট জায়গায় ফলে সপ্তাহে একদিন করে ওইসময় লোডশেডিং হচ্ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের অভিযোগ ঠিক নয়। 

    উল্লেখ্য, আগে এরাজ্যে ব্যাপক লোডশেডিং হতো। গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি লো-ভোল্টেজজনিত সমস্যাও ছিল। তৃণমূল জমানায় বিদ্যুৎ বিভাগের ভোল বদল করা হয়। তারফলে লোডশেডিংয়ের ঘটনা অনেকটা‌ই কমেছে। আগে ঝড়ঝঞ্ঝা হলে গ্রামীণ এলাকায় পরবর্তী দু’তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ আসত না। তেমন কোনও যান্ত্রিক সমস্যা না হলে টানা লোডশেডিংয়ের ঘটনা এখন ঘটে না বললেই চলে। বাঁকুড়াতেও বর্তমানে লোডশেডিং সেভাবে হয় না। তবে গত কয়েকদিন ধরে এই সমস্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাঝেমধ্যেই লোডশেডিং হচ্ছে।

    বাঁকুড়ার বাসিন্দা রীতা গোস্বামী, বিমান ঘোষ বলেন, কার্যত নিয়ম করে সকাল ও বিকেলে লোডশেডিং হচ্ছে। তার জেরে আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যুৎদপ্তর সরবরাহ নিয়মিত করলে সুবিধা হয়।

     বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার বর্ষার মরশুমে পরপর নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির জল ঢুকে বিদ্যুৎবাহী যন্ত্রাংশ বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেই কারণে গত তিন মাস ধরে কিছু কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে। তবে তা ক্ষণস্থায়ী ছিল। দ্রুত বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী-আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে যন্ত্র বা মেশিন মেরামত করে পরিষেবা স্বাভাবিক করেছেন। তবে গাছপালা ছাঁটার কারণে বর্তমানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার জেরে উপভোক্তাদের যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

    বিদ্যুৎ দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, বর্ষার বৃষ্টিতে গাছের ডালপালার বৃদ্ধি বেশি হয়। সেই কারণে তা বিদ্যুৎবাহী তারের কাছাকাছি চলে যায়। ফলে সেসব ছেঁটে ফেলা দরকার। তা না হলে পুজোর সময় কোনও কারণে তা তারের উপর ভেঙে পড়লে সমস্যা হবে। তখন বিদ্যুৎবিভ্রাট হলে হইচই হবে। পুজোর সময় বহু মানুষ রাস্তায় বের হয়। তাদের উপর গাছের ডাল সহ বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে পড়লে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফলে এই সময় আমরা গাছপালা ছেঁটে ফেলছি। তবে গ্রাহকদের সুবিধার্থে ও সরকারি অফিস-কাছারির কাজে বিঘ্ন ঘটা রুখতে মূলত সকাল ৭-৯টার মধ্যে ‘পাওয়ার কাট’ করে কাজ সারা হচ্ছে। • নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)