নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: একমাত্র শিক্ষিকা অবসর নিয়েছেন। তার জেরে চলতি বছরের মে থেকে ইসমাইল শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের গেটে তালা ঝুলছে। এই ঘটনা বীরভূমের রাজনগর ব্লকের রমজুপাড়ার। এই পরিস্থিতিতে ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়াদের একপ্রকার বাধ্য হয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতে হচ্ছে। ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে সমাজ মাধ্যমে সরব হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া আলিয়া খাতুন। ইতিমধ্যে ওই খুদে পড়ুয়ার সহজ-সরল বার্তা সবারই নজর কেড়েছে। অন্যদিকে, স্থানীয়দের তরফেও ইসমাইল শিশু শিক্ষা কেন্দ্র ফের চালুর বিষয়ে প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। রাজনগরের বিডিও শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। গুরুত্ব সহকারে ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেটিকেপুরনো ছন্দে ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে।
২০০২ সালে রমজুপাড়ায় এই ইসমাইল শিশু শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। শুরুর দিকে দু’জন শিক্ষিকা প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনার দায়িত্ব সামলাতেন। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে মাত্র একজন শিক্ষিকাই সেই দায়িত্ব সামলে আসছিলেন। চলতি বছরের মে মাসে তিনি অবসর নেন। ওঁর কাঁধে প্রায় ৪০ জন পড়ুয়ার দায়িত্ব ছিল। কিন্তুতাঁর অবসরের পর থেকেই ওই শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে একজনও শিক্ষক কিংবা শিক্ষিকাআসেননি। ফলে গত মে মাস ধরেইএই কেন্দ্রের গেটে তালা ঝুলছে।এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা সন্তানদের পাশের দামপাড়া গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন। প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরের ওই স্কুলে পঠন-পাঠনের মান নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও যাতায়াতের সমস্যায় সবাই জেরবার। অভিযোগ, স্কুলে যাওয়ার রাস্তায় বাঁদরের উৎপাত রয়েছে। পড়ুয়াদের যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে যথেষ্টই সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।
আলিয়া খাতুন বর্তমানে দামপাড়া প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়া। যদিও এক সময় ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রেই আলিয়ার পড়াশোনা চলত। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ইসমাইল শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের গেট তালা বন্ধ হতেই বেড়েছে সমস্যা। আলিয়ার কথায়, একসময় বন্ধুর সঙ্গে এখানেই পড়াশোনা করতাম। এখন অনেকটা রাস্তাপেরিয়ে দামপাড়ার স্কুলে যেতে হয়। পথে বাঁদরের সমস্যা রয়েছে। স্কুলে যেতে ভয় লাগে। আমিও চাই আগের শিক্ষাকেন্দ্রফের চালু হয়ে যাক।
অভিভাবক সুরেনা বিবি বলেন, আমার ছেলে ইসমাইল শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে পড়ত। তবে আচমকাই ওখানে তালা পড়ে যায়। আমার ছেলে সহ অন্য পড়ুয়াদের পাশের গ্রামের স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। ওই স্কুলে যাওয়া আসার খুবই সমস্যা রয়েছে। আমরা চাই ইসমাইল শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। ফের চালু হোক ক্লাস।