দক্ষিণ দমদমে পরপর কুকুরের কামড় আক্রমণকারী সারমেয়র মৃত্যু, আতঙ্ক
বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: দক্ষিণ দমদমের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কুকুরের কামড়ে ১০ জনের বেশি জখম হয়েছেন। পুরসভার তরফে আক্রমণকারী কুকুরটিকে খাঁচাবন্দি করে রাখা হয়েছিল। কুকুরটির আচরণ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্তের মতো ছিল। এক দিনের মধ্যেই খাঁচায় থাকা কুকুরটি মারা যায়। ফলে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। পুরসভার তরফে ওই এলাকার আরও পথকুকুর ধরে খাঁচায় আটকে রাখার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
১২ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যায়াম সমিতির গলি লাগোয়া এলাকায় বেশ কিছু পথকুকুর থাকে। গত বৃহস্পতিবার থেকে একটি কুকুর ক্ষেপে ওঠে। সাদা ও বাদামি রঙের কুকুরটি পরপর কয়েকজনকে কামড়ায়। বয়স্ক মানুষ, যুবক— যাকেই সামনে পেয়েছে, কামড়েছে। কয়েকজনের শরীর থেকে কামড়ে মাংসও তুলে নেয়। আক্রান্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুরসভার হাসপাতালে এসে জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছেন। যাদের জোরালো কামড় দিয়েছে, তাঁদের বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়। রবিবার দুপুরে পুরকর্মীরা গাড়ি নিয়ে ওই এলাকায় যান। কুকুরটিকে চিহ্নিত করে খাঁচাবন্দি করা হয়। পর্যবেক্ষনের জন্য স্থানীয় নির্মীয়মাণ আবাসনে রাখা হয়েছিল কুকুরটিকে। জল সহ অন্যান্য খাবার দেওয়া হলেও সে খায়নি। জল দেখেই ভয় পাচ্ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় কুকুরটি মারা যায়। চিকিৎসকদের দাবি, সাধারণত জলাতঙ্ক আক্রান্ত কোনও কুকুর কামড়ানো শুরু করার তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে মারা যায়।
এই পরিস্থিতিতে পুরসভার তরফে ওই এলাকার সন্দেহজনক পথকুকুরগুলিকে আপাতত খাঁচাবন্দি করে কয়েকদিন পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই মৃত কুকুরটি সত্যি জলাতঙ্ক ভাইরাসে আক্রান্ত হলে অন্য কুকুরকেও কামড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে মারণ ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কাও থেকে যায়। স্থানীয় ওষুধ দোকানের মালিক স্বরূপ ঘোষ বলেন, ‘ওই কুকুরটি এলাকার অনেককে কামড়েছে। আমরা অনেককে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালেও পাঠিয়েছি। পুরসভা হাসপাতালেও টিকা নিয়েছে অনেকে। এলাকাবাসী খুবই আতঙ্কে আছে। পুরসভার দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত।’ স্থানীয় কাউন্সিলার জয়ন্তী সাহা বলেন, ‘এই সময় কুকুর তো অনেককেই কামড়ায়। বিষয়টি খোঁজ নেব।’ পুরসভার সিআইসি (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস বলেন, ‘খাঁচাবন্দি কুকুরটি মারা গিয়েছে। যাঁদের কামড়েছে, তাঁদের টিকাকরণ হয়েছে। পর্যবেক্ষণের জন্য সন্দেহজনক অন্য কুকুরগুলি ধরার চেষ্টা চলছে। যেহেতু সবার টিকাকরণ হয়েছে, তাই আশঙ্কার বিষয় নেই।’