• বিপজ্জনক ভাবে বেড়েছে ৪০০টিরও বেশি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের আকার, সতর্ক করল কেন্দ্রীয় জল কমিশন
    এই সময় | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • বিপদ বাড়ছে হিমালয়ে। গত কয়েক দিনে মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান, ধসের জেরে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ, সিকিম, উত্তরাখণ্ড, জম্মু-কাশ্মীরের মতো রাজ্যগুলি। সেই সময়েই আরও বড় বিপদের কথা শুনিয়েছে কেন্দ্রীয় জল কমিশন। তারা জানিয়েছে, হিমালয় অঞ্চলে ৪০০টিরও বেশি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের আকার বিপজ্জনক ভাবে বেড়েছে। ফলে ওই এলাকায় দুর্যোগের আশঙ্কাও বাড়ছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় জল কমিশন জানিয়েছে, এই হ্রদগুলির উপর ক্রমাগত নজরদারি রাখা প্রয়োজন।

    জুন মাসের গ্লেসিয়াল লেকস অ্যান্ড ওয়াটার বডিজ়-এর মাসিক রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় জল কমিশন জানিয়েছে, যে হ্রদগুলি নিয়ে বিপদ বাড়ছে সেগুলি ছড়িয়ে আছে লাদাখ, জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশে। ওই রিপোর্ট অনুসারে, গ্লেসিয়াল লেক অ্যাটলাস ২০২৩-এর তথ্য অনুয়ায়ী, ৬৮১টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের মধ্যে ৪৩২টি রয়েছে ভারতে। সেই হ্রদগুলির আকার বেড়েছে। এই ফলে হিমালয় অঞ্চলে থাকা রাজ্যগুলিতে বিপদের ঝুঁকি আরও বাড়ছে।

    কেন্দ্রীয় জল কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে, দেশে হিমবাহসৃষ্ট হ্রদগুলির মোট এলাকা ২০১১ সাল থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। ওই হ্রদগুলির মোট আকার বা আয়তন ১৯১৭ হেক্টর থেকে বেড়ে ২৫০৮ হেক্টর হয়েছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, অরুণাচল প্রদেশে ১৯৭টি, লাদাখে ১২০টি, জম্মু-কাশ্মীরে ৫৭টি, সিকিমে ৪৭টি, হিমাচল প্রদেশে ৬টি এবং উত্তরাখণ্ডে ৫টি এই রকম হ্রদ আছে চলতি বছরের জুনের মধ্যে হিমালয় অঞ্চলের ১৪৩৫টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের আকার বেড়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

    যে ভাবে এই হ্রদের আকার বাড়ছে, তাতে বিপদের সম্ভাবনাও প্রবল ভাবে বাড়ছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় জল কমিশন। সেই কারণেই এই হ্রদগুলির উপর নজরদারি চালানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা জানিয়েছে ওই কমিশন। তাদের মতে, বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্য বিপদ ঘনিয়ে আসছে তা আঁচ করতে পারলেই আগাম সতর্ক করার মতো ব্যবস্থাও গড়ে তোলা দরকার।

    সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের বৈষ্ণদেবীর রাস্তায় ধস নামা ছাড়াও উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর ধরালীতে ভয়ানক বিপর্যয় নেমে আসে। ওই অঞ্চলে যে হড়পা বান আসে তা মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আবার অনেকের মতে, হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ ফেটে এই হড়পা বানের সৃষ্টি হয়। এর আগে সিকিমেও হ্রদ ফেটে তিস্তা নদীর জল বেড়ে যাওয়ার কারণে সেখানে ভয়ঙ্কর বিপদ নেমে এসেছিল। তাতেও বিভিন্ন এলাকার রাস্তা এবন সেতুর ক্ষতি ছাড়াও ৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। মৃতদের মধ্যে ছিলেন সেনা জওয়ানরাও।

  • Link to this news (এই সময়)