উত্তর ভারতে চলছে প্রবল বৃষ্টি। আর তার ফলে হুহু করে বাড়ছে বিভিন্ন নদীর জলস্তর। নদীর জলে ভেসেছে পঞ্চনদের দেশ পাঞ্জাবের বিস্তীর্ণ এলাকা। দু'কূল ছাপিয়ে জল বইছে শতদ্রু নদীতেও। পাশাপাশি জল ছাড়া হয়েছে একাধিক বাঁধ থেকেও।
সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ইসলামাবাদকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করেছে। জানা যাচ্ছে, গত সপ্তাহে তাওয়াই নদীর বন্যা নিয়ে পাকিস্তানকে তিনবার সতর্কবার্তা দিয়েছিল নয়া দিল্লি। মঙ্গলবার ফের আরও একবার পাকিস্তানকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে। সূত্রের খবর, ‘মানবিক কারণে’ এই সতর্কবার্তা পাঠানো হচ্ছে ইসলামাবাদে।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পহেলগাম হামলার পরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করেছিল ভারত। এই চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু এবং তার দুই উপনদী, বিতস্তা বা ঝিলম এবং চন্দ্রভাগা বা চেনাবের জলে পাকিস্তানের অধিকার থাকবে। ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকবে তিনটি উপনদী — বিপাশা, শতদ্রু এবং ইরাবতীর জল। সামগ্রিক ভাবে সিন্ধু এবং তার উপনদীগুলির মোট জলের উপর পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ, ভারতের ২০ শতাংশ। চুক্তি অনুযায়ী, ভারত বা পাকিস্তান নিজেদের প্রয়োজনে ওই জল ব্যবহার করলেও কোনও অবস্থাতেই জলপ্রবাহ আটকে রাখতে পারবে না।
এই চুক্তি স্থগিত হওয়ার ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে নদীর জল সংক্রান্ত (হাইড্রোলজিক্যাল) ডেটা শেয়ার করা হবে না বলেই জানিয়েছিল ভারত। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে পাকিস্তানকে আগাম সতর্ক না করলে সেখানকার বহু মানুষ মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই জন্যই মানবিক কারণেই বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে পাকিস্তানকে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাঞ্জাবের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
প্রসঙ্গত, উত্তর ভারতের প্রবল বৃষ্টিতে ২৪ ঘণ্টায় কমবেশি ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ভারতের সীমানার মধ্যে থাকা পাঞ্জাব প্রদেশেই গতমাসে ধস ও বন্যার কারণে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দিল্লিতেও তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে যমুনার জল।
মঙ্গলবার পাকিস্তানের সরকারি সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী মোট গত মাসে পাকিস্তানে প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষ বন্যার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ১০ লক্ষ মানুষকে বন্যা পরিস্থিতির কারণে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সরকারি সূত্রে খবর, জুলাই মাসের ২৬ তারিখ থেকে অগস্ট মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত বন্যার কারণে পাকিস্তানে ৮৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।