ডাকযোগে কার্ড পাঠানোর পদ্ধতিতে বদল আনছে নির্বাচন কমিশন
আনন্দবাজার | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নতুন ভোটার কার্ড সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে ডাকযোগে পাঠানোর প্রথা অনেক দিন ধরেই চলে আসছে। সেই বিষয়টির নিয়ন্ত্রণ এত দিন ছিলজেলা প্রশাসনগুলির হাতেই। এ বার সেই পদ্ধতিতে কিছুটা বদল এনে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরের মাধ্যমে নিজেদের হাতে নিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, এতে যে কার্ডগুলি ডাকযোগে আবেদনকারীর ঠিকানায় পৌঁছচ্ছে না, সেগুলির উপরেও নজর রাখা সম্ভব হবে। ভুয়ো ভোটার কার্ড বিতর্কের আবহে এই পদক্ষেপকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।
দফতর সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন আগে প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে সিইও-র তরফে যে বার্তা পাঠানো হয়েছে,তাতে বলা হয়েছে, যে কার্ডগুলি ডাকযোগে আবেদনকারীর হাতে পৌঁছচ্ছে না এবং ফিরে আসছে প্রশাসনের কাছে, সেগুলির সবিস্তার তথ্য দিতে হবে। ডাকযোগে পাঠানোর অন্যতম যুক্তি ছিল— এতে আবেদনকারী যে ঠিকানা উল্লেখ করেছেন, তা এক বার যাচাই হয়েযায়। কিন্তু যে কার্ডগুলি ফেরত আসছে, সেগুলির ক্ষেত্রে ঠিকানা ভুল ছিল, না কি আবেদনকারী সেই ঠিকানায় ছিলেন না, সেই তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। কর্তাদের একাংশেরযুক্তি, কোনও কারণে আবেদনকারী ঠিকানায় না থাকলেও সমস্যা হয় না। সে ক্ষেত্রে পরেও ডাকঘর থেকে প্রমাণ দেখিয়ে তা সংগ্রহ করা সম্ভব। কিন্তু যেগুলি ফেরত এসে দিনের পর দিন এসডিও বা বিডিও অফিসে পড়ে থাকছে, সেগুলি সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি হতে পারে।
আগের পদ্ধতিতে আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পরে নির্দিষ্ট সময় অন্তর নতুন কার্ড ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার বা ইআরও পাঠাতেন ছাপাখানায়। কিছু দিন অন্তর একগুচ্ছ করে কার্ড পাঠানো হতো ছাপতে। জেলা নির্বাচনী আধিকারিকছাপার বরাত দিতেন। এতে সময় অনেকটাই বেশি লাগত। নতুন পদ্ধতিতে প্রতিদিন মঞ্জুর হওয়া কার্ডগুলি ইআরও সরাসরি ছাপাখানায় পাঠাবেন, কিন্তু বরাত দেবে সিইও কার্যালয়। কার্ড ছাপার পরে জিপিও-র মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়বে গোটা রাজ্যের ঠিকানায়। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এতে আবেদন মঞ্জুর হওয়ার সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে আবেদনকারী তাঁর ভোটার কার্ড হাতে পাবেন। আবার যেগুলি ফিরে আসবে, তা কেন এল, তা-ও বুঝতেপারবে কমিশন।
প্রসঙ্গত, এর আগে একসঙ্গে কত আবেদনপত্র দ্রুত মঞ্জুর হচ্ছে, সেই অডিট করার নির্দেশ জেলা প্রশাসনগুলিকে দিয়েছিল কমিশন। তাতে বোঝা সম্ভব, পদ্ধতির ফাঁকগলে অবৈধ ভাবে কোনও ভোটার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে কিনা। পর্যবেক্ষক শিবিরের একাংশের অনুমান, ছাপা কার্ড পাঠানোর নতুন পদ্ধতি সরাসরি না হলেও, সেই নজরদারির উদ্দেশ্যের সঙ্গে কোনও ভাবে সম্পর্কযুক্ত।