• অযোগ্য তালিকায় শাসক ও বিরোধী নেতাদের ছেলেমেয়ে, বিতর্ক
    আনন্দবাজার | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • এসএসসি প্রকাশিত ‘দাগি’দের তালিকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষেত্রেই তৃণমূল নেতা-নেত্রী, তাঁদের ঘনিষ্ঠদের নাম আছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে নাম আছে বিরোধী নেতা-নেত্রী, তাঁদের পরিজনদেরও। এ নিয়ে দু’পক্ষের তর্কাতর্কি, কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে।

    পঞ্চায়েত সমিতির এক সভাপতির মেয়ের নাম উঠেছে ‘দাগি’র তালিকায়। বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূলের সুদেবী মণ্ডলের মেয়ে মৌসুমীর নাম তালিকায় আছে। সুদেবী বলেন, “অযোগ্যদের তালিকায় আমার মেয়ের নাম আছে। বিষয়টি হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। আদালতের উপরে আস্থা আছে। সত্য এক দিন প্রকাশ পাবেই।” সুদেবীর দাবি, তাঁর মেয়ে নিজের যোগ্যতায় পরীক্ষা দিয়ে, কাউকে কোনও টাকা না দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন।

    বাগদা এলাকায় চন্দন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে অনেককে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। পরে গ্রেফতার হন তিনি। সুদেবী বলেন, “চন্দন মণ্ডলকে আমি আগে চিনতাম না। পরবর্তী সময়ে তাঁর কথা শুনেছি। আমার মেয়ের চাকরির সঙ্গে চন্দনের কোনও সম্পর্ক নেই।”

    বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডলের কথায়, “তৃণমূলের সকলেই চুরি করে চাকরি পেয়েছে, এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে আশ্চর্যের বিষয়, চোরেদের সরকার এখন চোরেদের তালিকা প্রকাশ করছে!” তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “আইন আইনের পথে চলবে।”

    ‘দাগি’ তালিকায় নাম উঠেছে ভাঙড়ের এক বিজেপি নেতার ছেলেরও। তালিকায় ২০০ নম্বরে নাম আছে ভাঙড় ১ ব্লকের ভাঙড় নারায়ণপুর হাই স্কুলের (ওল্ড সাইট) বাংলার শিক্ষক অতনু মণ্ডলের। তিনি ভাঙড়ের বিজেপি নেতা তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি অবনী মণ্ডলের ছেলে। ২০১৯ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি কাজে যোগ দেন অতনু। স্কুলে যাচ্ছেন না তিনি, বেতনও বন্ধ। প্রতিক্রিয়া জানতে একাধিক বার ফোন, মেসেজ করা হলেও অতনু সাড়া দেননি। তাঁর বাবা অবনীর দাবি, “আমার ছেলে প্রতিভাবান। ওর যোগ্যতা ছাত্রছাত্রী ও সহকর্মীরা জানেন। কোনও তৃণমূল নেতার সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই। আমার ছেলে ফের আইনের দ্বারস্থ হয়েছে।”

    ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকাত মোল্লা কটাক্ষ করে বলেন, “যাঁরা কথায় কথায় তৃণমূলের নেতাদের দিকে আঙুল তোলেন, তাঁরা আগে আয়নায় নিজেদের মুখ দেখুন। নিজেরাই মুখে কালি মেখে বসে আছেন!”বাম নেতা তুষার ঘোষের অভিযোগ, “তৃণমূল খোলা বাজারে চাকরি বিক্রি করেছে, আর বিজেপির নেতারা সেটা কিনেছেন। অবনীর ছেলে সে ভাবেই চাকরি পেয়েছেন।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)