‘অক্ষয় কুমারের অধিকাংশ ছবিতেই রাজনৈতিক পয়সা ঢালা হয়’, ‘তেহরান’ ছবির দেশপ্রেম নিয়ে কী বললেন কিউ
আনন্দবাজার | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি। কিন্তু ওটিটি-তে সাড়া ফেলেছে জন আব্রাহামের অভিনীত ছবি ‘তেহরান’। ছবিতে দেশপ্রেমের প্রসঙ্গ রয়েছে। কিন্তু এটি তথাকথিত দেশাত্মবোধক ছবি নয়, জানালেন পরিচালক কিউ তথা কৌশিক মুখোপাধ্যায়। তিনি এই ছবিতে এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আনন্দবাজার ডট কমকে এও জানালেন, তাঁর কাছে দেশপ্রেমের সংজ্ঞা ঠিক কী।
কিউকে দেখা গিয়েছে ‘র’ (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং)-এর এক আধিকারিকের চরিত্রে। পরিচালক জানান, বাস্তবে তাঁর যে ভাবমূর্তি মানুষের কাছে ধরা পড়ে, এই চরিত্র ঠিক তার উল্টো। কিউ বলেন, “এটা দেশাত্মবোধক ছবি নয়। নির্মাতারা একটু ভিন্ন ধাঁচে ছবিটা বানাতে চেয়েছিলেন। ভিন্ন ধরনের অভিনেতাদেরও চেয়েছিলেন। আমি অভিনয় করি না। তাই আমি কোথাও অডিশনও দিই না। যাঁরা আমাকে পছন্দ করেন, তাঁরাই আমাকে ছবিতে ডাকেন। তবে ভালই লাগে অভিনয় করতে।”
ছবিতে ইরান ও ইজ়রায়েলের সম্পর্ক এবং সেখানে ভারতের কী ভূমিকা, সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রসঙ্গেই দেশপ্রেমের প্রসঙ্গ তোলেন কিউ। তাঁর কথায়, “ভারতবর্ষ এমন একটা দেশ, যাকে নিয়ে নানা ধারণা রয়েছে। এই দেশে সকলকে নিয়ে চলার একটা ভাবনা ছিল। তবে বর্তমানে সেই ভাবনার বিরুদ্ধেই একটা স্রোত বইছে। আমি খুব একটা দেশপ্রেমিক নই। তবে এই ভাবনাটা আমার খুব প্রগতিশীল বলে মনে হয়। আমরা কখনও এক নম্বর হতে চাইনি। আমরা বরাবর চেয়েছি, ভারতে যেন সবাই ভাল ভাবে থাকে। সেটা অর্জনও করা গিয়েছিল। কিন্তু এখন আবার সেটা অন্য দিকে চলে যাচ্ছে।”
অরুণ গোপালনের পরিচালিত এই ‘তেহরান’ ছবির নির্মাণ ভাল লেগেছিল বাঙালি পরিচালকের। তথাকথিত অন্য যে কোনও দেশাত্মবোধক ছবির মতো নয়। বরং আন্তর্জাতিক ছোঁয়া বজায় রেখে এই ছবি তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। দেশাত্মবোধক ছবি প্রসঙ্গে উঠে আসে বিবেক অগ্নিহোত্রীর নাম। সম্প্রতি তাঁর ‘দ্য বেঙ্গল ফাইল্স’ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। কিউ বলেন, “ওঁর ছবিগুলি তো প্রোপাগান্ডা। কথাও হয়েছিল ওঁর সঙ্গে। বহু বছর আগে কান চলচ্চিত্র উৎসবে একবার ওঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল।” হাসতে হাসতে বিবেক সম্পর্কে কিউ বলেন, “তিনি ভেবেছিলেন, আমিও হয়তো এমন প্রোপাগান্ডা ছবিই বানাতে চাই। তাই কথা বলতে এসেছিলেন। খুবই মজার বিষয়।”
শুধু বিবেক নয়। অক্ষয় কুমারের বেশ কিছু ছবিও তিনি ‘প্রোপাগান্ডা’ই মনে করেন। কিউ-এর স্পষ্ট বক্তব্য, “এই ছবিগুলো সম্পূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক পয়সা দিয়ে বানানো। প্রচুর পয়সা খরচ করা হয়েছে এই ছবিগুলোর পিছনে। আসলে বলিউডের বেশির ভাগ লোকেরই কোনও শিরদাঁড়া নেই। যে দিকে পয়সা পায়, সেই দিকেই এরা যায়। যদিও বলিউডের বড় তারকা বলতে গেলে বলা যেতে পারে, খানেরা অন্য রকম। তবে আমার তো মুম্বইয়ের সঙ্গে সেই ভাবে সম্পর্ক নেই। তাই আর কোনও বক্তব্যও নেই।”
আবার কি বলিউডের ছবিতে দেখা যাবে কিউকে? ‘‘বন্ধুরা অভিনয় করতে বললে তবেই করব। তা ছাড়া অভিনয়কে কেরিয়ার বানানোর কোনও পরিকল্পনা নেই’’, বললেন কিউ।