• GST স্ল্যাব কমলেও ‘ক্ষতি’ নয় রাজ্যগুলির: SBI রিসার্চ
    এই সময় | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: চার স্ল্যাব থেকে কমিয়ে জিএসটি হার দুই স্ল্যাব করলেও দেশের রাজ্যগুলির কোনও আর্থিক ক্ষতি হবে না, তারা প্রকৃতপক্ষে লাভবানই থাকবে বলে মঙ্গলবার এসবিআই রিসার্চ রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তাদের রিপোর্টে এসবিআই রিসার্চ জানিয়েছে, কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে জিএসটি কাউন্সিল করের হার দু’টি স্তরে রাখলে, এমনকী করের হার কমানো হলেও চলতি অর্থবছরে রাজ্যগুলির রাজস্বের অঙ্ক ১৪.১০ লক্ষ কোটি টাকার বেশি হবে বলে অনুমান।

    এর আগেও ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে জিএসটি হারে বদল করা হয়েছিল। তার ফলে সাময়িক ভাবে কিছুদিনের জন্য রাজ্যগুলির মাসিক জিএসটি আদায় ৩-৪ শতাংশ (আনুমানিক মাসিক ৫ হাজার কোটি টাকা বা বার্ষিক ৬০ হাজার কোটি টাকা) কমে গেলেও, ধারাবাহিক অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হাত ধরে রাজস্ব আদায় প্রতি মাসে ৫-৬ শতাংশ বেড়েছিল।

    কেন্দ্র বিভিন্ন পণ্যের উপরে জিএসটি হার বর্তমান ৫, ১২, ১৮ এবং ২৮ শতাংশের বদলে শুধুমাত্র ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। এর পাশাপাশি তামাকজাত পণ্য, অ্যালকোহল এবং বেশ কিছু বিলাসবহুল সামগ্রীর উপরে ৪০ শতাংশ হারে ‘সিন’ ট্যাক্স বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে, ৫,১২,১৮ এবং ২৮ শতাংশ হারে জিএসটি নেওয়া হয়। বিলাসবহুল পণ্যের ক্ষেত্রে এর উপরে কম্পেনসেশন সেস বাবদ ১ থেকে ২৯০ শতাংশ বসানো হয়ে থাকে।

    যদিও, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হবে দাবি করে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে আট বিরোধী শাসিত রাজ্য। জিএসটি হার সরলীকরণের ফলে তাদের আনুমানিক ১.৫-২ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হবে বলে দাবি করা হয়েছে। এর আগে ১৯ অগস্ট প্রকাশিত রিপোর্টে এসবিআই রিসার্চ জানিয়েছিল, জিএসটি হার সরলীকরণের ফলে কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির বছরে গড়ে আনুমানিক ৮৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হতে পারে।

    যদিও মঙ্গলবার প্রকাশিত তাদের রিপোর্টে এসবিআই রিসার্চ জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে জিএসটি আদায়ের নিরিখে রাজ্যগুলি লাভবানই থাকবে, এমনকী প্রস্তাবিত কর ব্যবস্থার ফলে তাদের রাজস্ব আদায়ে কোনও বদল দেখা যাবে না। এর কারণও রিপোর্টে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জিএসটি বাবদ যে অর্থ আদায় হয়, তা কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করা হয়। প্রত্যেকেই ৫০ শতাংশ করে রাজস্ব পায় বলে প্রথম কারণে বলা হয়েছে।

    দ্বিতীয়ত, যে প্রক্রিয়া মেনে ট্যাক্স ডিভলিউশন করা হয়, তাতে কেন্দ্রের ৪১ শতাংশ ভাগ ফের রাজ্যগুলিতেই ফেরত যায়। সব মিলিয়ে জিএসটি বাবদ আয়ের প্রায় ৭০ শতাংশ রাজ্যগুলির কাছে যায়।

    রিপোর্টে এসবিআই রিসার্চ বলেছে, ‘২০২৫-২৬ অর্থবছর নিয়ে আমাদের যা পূর্বাভাস, তাতে জিএসটি হার কমানোর পরেও রাজ্যগুলি লাভবান থাকবে। তাদের কোনও রাজস্ব ক্ষতি হবে না। স্টেট জিএসটি হিসেবে রাজ্যগুলি কমপক্ষে ১০ লক্ষ কোটি টাকা এবং ডিভলিউশনের কারণে আরও ৪.১ লক্ষ কোটি টাকা পাবে। ফলে, তারা লাভবানই থাকছে।’

    জিএসটি কার্যকর হওয়ার পরে কার্যকর গড় জিএসটি হার ১৪.৪ শতাংশ ছিল। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তা কমে ১১.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে জিএসটি হারের সরলীকরণ হলে গড় জিএসটি হারের অঙ্ক কমে ৯.৫ শতাংশ হতে পারে বলে বিশ্বাস এসবিআই রিসার্চের।

    ২০১৮ সালের জুলাই মাসে এবং ২০১৯ সালের অক্টোবরে জিএসটি হারে বদল করা হলেও তা রাজস্ব আদায় দুর্বল করেনি বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থাটি। বরং, সাময়িক ভাবে করের হারে কিছু তারতম্য দেখা গেলেও দীর্ঘমেয়াদে রাজস্ব আদায় বেড়েছে।

    অতীতে এর ফলে অতিরিক্ত প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, করের হার সরলীকরণকে চাহিদার স্বল্পমেয়াদি উদ্দীপক হিসেবে দেখা যেতে পারে। কর ব্যবস্থা সহজ করার কাঠামোগত প্রক্রিয়া হিসেবেও একে গণ্য করা যায়।
  • Link to this news (এই সময়)