ইন্সটাগ্রাম ফিল্টার ব্যবহার করে বয়স কমাতেন প্রেমিকা! সামনাসামনি দেখে সহ্য করতে পারেননি যুবক, অন্ধকারে ডেকে নৃশংস কাণ্ড ঘটালেন
আজকাল | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে আবারও ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। এবার ঘটনাটি মেইনপুরী জেলায় ঘটে৷ ২৬ বছর বয়সী এক যুবক তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্কের টানাপোড়েন ও ঋণ ফেরত দেওয়ার চাপ থেকে মুক্তি পেতে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। প্রেমিকা হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন যুবক। খবর অনুযায়ী, নিহত যুবতী বয়সে অভিযুক্তের প্রায় দ্বিগুণ ছিলেন। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মূল অভিযুক্ত অরুণ রাজপুত নিজের প্রেমিকাকে ওড়নার সাহায্যে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এই ঘটনা ঘিরে রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অরুণ রাজপুত ও ৫২ বছর বয়সী ওই যুবতী ইনস্টাগ্রামে একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হন। শুরুতে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে দুজনের মধ্যে অনলাইনে কথোপকথন চলতে থাকে। এরপর একপর্যায়ে তাঁরা মোবাইল নম্বরও আদানপ্রদান করেন। যুবতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ইনস্টাগ্রাম ফিল্টারের মাধ্যমে নিজেকে কম বয়সী হিসেবে উপস্থাপন করতেন।
খবর অনুযায়ী, দু মাস আগে তাঁরা প্রথমবারের মতো ফাররুখাবাদ জেলার একটি হোটেলে দেখা করেন। সেখানে রাজপুত বুঝতে পারেন, যুবতীর বয়স প্রকৃতপক্ষে অনেক বেশি। তখন ওই যুবতী জানান যে তাঁর বয়স ৫২ বছর। বয়স বেশি হলেও রাজপুত সম্পর্ক থেকে সরে আসেননি। বরং কৌশলে তাঁর কাছ থেকে প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা ধার নেন।
এরপর ওই মহিলা রাজপুতকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন এবং একইসঙ্গে ঋণ ফেরতের জন্যও জোর দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজপুত তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করা শুরু করেন। তদন্তে জানা গিয়েছ, এরপর তিনি তাঁর প্রেমিকাকে মেইনপুরীতে ডেকে নেন। পরবর্তীতে সেখানে একটি নির্জন স্থানে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে হত্যা করেন। পরে মোবাইল ফোন থেকে সিমকার্ড খুলে ফেলে দিয়ে দেহটি ঘটনাস্থল থেকে অদূরে কাঁশবনের ঝোপে ফেলে রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যান।
গত ১১ আগস্ট কোতোয়ালি এলাকার খারপাড়ি রাজবাহা সংলগ্ন অঞ্চলে পুলিশ মহিলার পরিত্যক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে মৃতদেহটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি, ফলে পুলিশ শুরুতে সেটিকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে চিহ্নিত করে এবং দাহ করে। এরপর ওই মহিলার ছবি জেলার অন্যান্য থানাগুলিতে পাঠানো হয়।
পরবর্তীতে মহিলার পরিবারের সদস্যরা নিকটবর্তী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। এরপর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পরিবারের দেওয়া ফোন নম্বরের কল ডিটেইলস রিপোর্ট (CDR) বিশ্লেষণ করে পুলিশ অভিযুক্ত প্রেমিক অরুণ রাজপুতের অবস্থান চিহ্নিত করে এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে রাজপুত হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। এহেন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত জারি রেখেছে। এর জেরে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।