• ভাকড়া ড্যামে চব্বিশ ঘণ্টায় জল বেড়ে তিন ফুট, রাজ্যের বহু জেলা জলমগ্ন, জারি সতর্কতা ...
    আজকাল | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  •  

    আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভাকড়া ড্যামে ২৪ ঘণ্টায় জল বেড়েছে প্রায় তিন ফুট। পাঞ্জাবের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি চরমে৷ হিমাচল প্রদেশের ভাকড়া ড্যামে জল স্তর মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ২.৭১ ফুট বেড়ে গিয়ে কর্তৃপক্ষকে সতর্কতা জারি করতে বাধ্য করেছে। এই অত্যাধিক পরিমানে জল বৃদ্ধির ফলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাঞ্জাবের সুতলজ নদীর তীরবর্তী জেলাগুলো- রূপনগর, নওয়ানশহর, লুধিয়ানা ও জলন্ধর-এ।

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভাকড়া ড্যামের জলাধার গোবিন্দ সাগর হ্রদে জল স্তর ছিল ১,৬৭৬.৭২ ফুট, যা বিপদসীমার (১,৬৮০ ফুট) মাত্র ৩.২৮ ফুট নিচে। সোমবার এই স্তর ছিল ১,৬৭৪ ফুট, অর্থাৎ বিপদসীমার ৬ ফুট নিচে। ভাকড়া বীজ ব্যবস্থাপনা বোর্ড (BBMB)-এর একজন কর্মকর্তা জানান, যদিও ড্যামটি বিপদসীমার ১০ ফুট উপরে জল ধারণ করতে পারে, তা হলেও এত উচ্চতা পর্যন্ত জল থাকলে ড্যামের নিরাপত্তা স্বাভাবিকভাবেই হুমকির মুখে পড়তে পারে।

    জলন্ধর প্রশাসন মঙ্গলবার সুতলজ নদীর তীরবর্তী ফিল্লৌর, লোহিয়ান এবং শাহকোট এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে সতর্কতা জারি করেছে।

    পাঞ্জাবের শিক্ষামন্ত্রী হরজোত সিং বাইন্স আনন্দপুর সাহিব থেকে নির্বাচিত বিধায়ক, জানান, আনন্দপুর সাহিব ও রূপনগর অঞ্চলে প্রবল জলের প্রবাহের কারণে ১২টি ভাঙন (ব্রিচ) হয়েছে। তিনি বলেন, 'পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।'

    গত বছরের তুলনায় এ বছর ভাকড়া জলাধারে জলের স্তরে ব্যাপক পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। গত বছর এই সময়ে স্তর ছিল ১,৬৩৯.৬৬ ফুট, যা এখনকার স্তরের চেয়ে ৩৭ ফুট কম। BBMB-এর ওই কর্মকর্তা জানান, এখনও ভরাট মরসুম শেষ হতে ১৮ দিন বাকি আছে (২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত)। বর্তমানে ভাকড়া ড্যামে প্রবাহিত হচ্ছে ১.০৭ লক্ষ কিউসেক জল, এবং ড্যামের টারবাইন ও স্পিলওয়ে গেট দিয়ে ছাড়া হচ্ছে ৫৬,০০০ কিউসেক জল।

    একইসঙ্গে তিনি আরও জানান, এই বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় বরফ গলনের পাশাপাশি বৃষ্টিপাত থেকেও জলাধারে উল্লেখযোগ্য হারে জল এসেছে। বর্তমানে জলাধারটির ৯৭ শতাংশ ভরাট হয়ে গিয়েছে, এবং বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বাকি ৩ শতাংশ মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূরণ হতে পারে। উল্লেখ্য, বিগত ১০ দিন ধরে স্পিলওয়ে গেট খোলা রয়েছে। গেট দিয়ে প্রায় ২৮,০০০ কিউসেক জল প্রবাহিত হচ্ছে।

    বিয়াস নদীর উপর নির্মিত পং ড্যামে মঙ্গলবার জল স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১,৩৯০.৬৩ ফুট, যা তার বিপদসীমা ১,৩৯০ ফুটের সামান্য উপরে। এখানে জলের আগমন হচ্ছে ৯৬,৭৭৭ কিউসেক এবং নির্গমন হচ্ছে ৯৫,৮৩৬ কিউসেক। পং ড্যামের ফ্লাডগেট ১৫ দিন আগে থেকেই খোলা রয়েছে, যার ফলে কাপুরথলা ও হোশিয়ারপুর জেলার নিচু এলাকাগুলো এবং কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে।

    বিয়াস ও সুতলজ নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত হরিকে হেডওয়ার্কসে জল প্রবাহ বেড়ে হয়েছে ২.৮৪ লক্ষ কিউসেক, যা ফেরোজপুর ও ফাজিলকা জেলার বন্যা পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে। সরকারি বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১০,০০০ হেক্টর কৃষিজমি জলে ডুবে গিয়েছে, ফলে মোট প্লাবিত জমির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১.৪৮ লক্ষ হেক্টর, যা আগের ১.৩৮ লক্ষ হেক্টর থেকে ১০,০০০ হেক্টর বেশি।
  • Link to this news (আজকাল)