• পোলবায় ভুয়ো পুলিশ সেজে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ২
    আজকাল | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুলিশের পোশাক পরে, তৃনমূল নেতাদের  ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে তোলাবাজির অভিযোগ,৫০ লক্ষ টাকা দাবী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে,পোলবায় গ্রেপ্তার দুই ভুয়ো পুলিশ, উদ্ধার পুলিশের পোশাক ও নকল অস্ত্রের খাপ। পোলবা থানায় ডিএসপি ডিএন্ডটি  প্রিয়ব্রত বক্সি জানান,পুলিশ সেজে তোলাবাজির অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম সৌমদীপ সাঁতরা(২৮), বাড়ি বলাগড়ের কুন্তিঘাটে, প্রতাপ ঘোষ(৩৬), বাড়ি মগড়ার তালান্ডু মালিপাড়া। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পুলিশের পোশাক,পিস্তল রাখার খাপ,দুটি মোবাইল ফোন,কার্তুজের ব্যাগ।

    গতকাল রাতে সুগন্ধার একটি কারখানা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পোলবা থানার পুলিশ। আজ তাদের আদালতে পেশ করে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএসপি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দীর্ঘদিন ধরেই ভুয়ো পরিচয়ে এই দুই অভিযুক্ত বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণা চালাত। তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এর পিছনে আরও কেউ জড়িত আছে কি না।

    সুগন্ধা দিল্লি রোডের পাশে কারখানা রয়েছে তপন মজুমদারের।সেই কারখানাতে গত বৃহস্পতিবার থেকে দফায় দফায় কয়েকবার উনি সেজে গিয়েছিল অভিযুক্তরা।পুলিশের পোশাক পড়ে কারখানায় ঢুকে কর্মীদেরকে ভয় দেখানো ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করা স্করপিও গাড়ির চাবি নিয়ে নেওয়া সবই করে তারা। এক লক্ষ্য ৬৫ হাজার টাকা ফোন পের মাধ্যমে  এবং নগদে তাদের দেন ব্যবসায়ী।

    ব্যবসায়ী বলেন,হুগলি সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় চট্টগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্তর সঙ্গে ছবি দেখিয়ে শাসক দল ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে অভিযুক্তরা। টাকা না দিলে ব্যবসা করতে পারবেন না বলেও হুমকি দেওয়া হয় ব্যবসায়ীকে। এরপরই পোলবা থানা বিষয়টি জানতে পারে।গতকাল রাতে দুই ভুয়ো পুলিশকে গ্রেপ্তার করে।

    প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই হোমগার্ড থেকে একেবারে পুলিশ সুপার সেজে প্রতারণার ঘটনা ঘটে কলকাতার বুকে ! তবে সবটাই ভুয়ো পরিচয়। এই ছদ্মবেশ নিয়েই চলছিল প্রতারণার চক্র, আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছিলেন বহু মানুষ। অবশেষে গরফা থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ল সেই ভুয়ো পুলিশ সুপার। বুধবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় বিশেষ অভিযানে ধরা পড়ে সুস্মিত সেন ওরফে রণজয় চট্টোপাধ্যায়। গরফা থানার পুলিশকে সহযোগিতা করে স্থানীয় আমডাঙা থানাও। কলকাতার গরফা এলাকায় ধৃতের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে মেলে একাধিক নকল নথি, প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা নগদ, পুলিশের পোশাক, সর্বাধুনিক আইফোন ও তিনটি দামি মোবাইল। এছাড়াও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে নীলবাতি লাগানো গাড়ি এবং রাজ্য পুলিশের লোগো বসানো মোটরবাইক।

    তদন্তে উঠে এসেছে, ওই গাড়ি ব্যবহার করে চারপাশে ঘুরে বেড়াতেন সুস্মিত। নিজেকে রণজয় চট্টোপাধ্যায় নামে পরিচয় দিয়ে দাবি করতেন, তিনি একজন পুলিশ সুপার। দামি ফোনে কথোপকথন চালিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাতেন যে তিনি রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। এর সুযোগ নিয়েই অনেককে প্রতিশ্রুতি দিতেন সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার। ফলে বহু মানুষ তাঁর ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হন।

    লালবাজার সূত্রে খবর, এভাবেই কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল সুস্মিত। সেই অর্থে গড়ে তোলে বিলাসবহুল জীবন। কিন্তু ক্রমে একের পর এক প্রতারিত ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করায় ফাঁস হয় তাঁর কীর্তি। ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন থানায় তাঁর নামে অভিযোগ রয়েছে। গরফা থানাতেও জমা পড়েছে অভিযোগ।

    সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, তাঁর বাড়ি থেকে যে সব পুলিশি নথি ও পোশাক উদ্ধার হয়েছে। কীভাবে এগুলো তাঁর হাতে এল, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। পুলিশ মনে করছে, হোমগার্ড হিসেবে কাজ করার সময় তৈরি হওয়া যোগাযোগকে কাজে লাগিয়েই হয়তো এইসব সংগ্রহ করেছিলেন। উল্লেখ্য, সুস্মিত একসময় রাজ্য পুলিশের হোমগার্ড ছিলেন। পরে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে চাকরি হারান। অভিযোগ, এক আসামিকে মেডিক্যাল পরীক্ষায় নিয়ে যাওয়ার সময় তার পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দায়ী ছিলেন তিনি। তবে এখন প্রশ্ন উঠছে— সেটা নিছক অসতর্কতা ছিল, নাকি টাকার বিনিময়ে আসামিকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন? তদন্তে উঠে আসতে পারে সেই উত্তরও।
  • Link to this news (আজকাল)