পরকিয়ায় কি খুনের আসল কারণ? হলুদ স্কুটিতে রক্তের দাগ দেখে চণ্ডীতলায় খুনের কিনারা করল পুলিশ...
আজকাল | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: চন্ডীতলায় এক ভয়াবহ ঘটনা। খবর অনুযায়ী, প্রেমিকার স্বামীকে খুন করে পালিয়ে যায় এক প্রেমিক। পরবর্তীতে কাকদ্বীপ হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তকে! অভিযোগ উঠেছে, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন। ঘটনা জানাজানি হতে হুলুস্থুল চারিদিক।
খবর অনুযায়ী, গত ৩১ আগস্ট রাতে চন্ডীতলার হাটপুকুর এলাকায় একটি হলুদ স্কুটিতে চাপ চাপ রক্ত দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায়। চন্ডীতলা থানার পুলিশ অদূরেই একটি ডোবা থেকে শ্রীমন্ত কোড়ার(৫০) গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে শ্রীমন্তর বাড়ি হুগলির পান্ডুয়া থানার চাঁদপুর গ্রামে। টুম্পা ক্ষেত্রপাল কে নিয়ে চন্ডীতলার কুমির মোড়ায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি। রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। টুম্পা স্থানীয় একটি জল কারখানায় কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। সেখানেই তাঁর সঙ্গে কাজ করতেন বরুন হালদার। বরুণ হাটপুকুর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এরপর ধীরে ধীরে টুম্পার সঙ্গে বরুণের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
খবর অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে প্রেমিক বরুনের সঙ্গে কাকদ্বীপে পালিয়ে গিয়েছিলেন টুম্পা। ঘটনার জেরে টুম্পার মা চন্ডীতলা থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেছিলেন। টুম্পার প্রথম পক্ষের দুটি সন্তান তাঁর বাপের বাড়ি পান্ডুয়াতে রয়েছে। তাদের দেখতে কিছুদিন পর কাকদ্বীপ থেকে পান্ডুয়ায় ফিরে আসেন তিনি। এরপর আবার শ্রীমন্তর সঙ্গে চন্ডীতলায় থাকতে শুরু করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন বরুণ শ্রীমন্তকে নিয়ে একসঙ্গে মদ্যপান করেন। তারপর দুজনে স্কুটি করে যাওয়ার সময় টুম্পাকে নিয়ে তীব্র বচসা শুরু হয়। নির্জন জায়গায় স্কুটি দাঁড় করিয়ে কিছুক্ষণ দুজনের মধ্যে চরম বচসা চলতে থাকে। এরপর আচমকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে শ্রীমন্তকে ডোবায় ফেলে দেয় বরুন। দুজনের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি হয়। আঘাত করার সময় বরুনও আহত হয়। এরপর আতঙ্কে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত।
ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ টুম্পাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। টুম্পাদ বয়ান থেকেই বরুণের কথা জানতে পারে পুলিশ। এও জানতে পারে ঘটনার পর বরুণ দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়। হুগলি গ্রামীন পুলিশের একটি টিম সেখানে পৌঁছে যায়। বরুণকে নজর বন্দি করে রাখে। পরবর্তীতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একইসঙ্গে তাঁকে শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চন্ডীতলা থানায় সাংবাদিক বৈঠক করে হুগলি গ্রামীন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃশানু রায় এ কথা জানিয়েছেন। ঘটনার জেরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন। বরুণ হালদারের সঙ্গে আর কেউ যুক্ত আছে কিনা তার খোঁজ চলছে।পাশাপাশি টুম্পা ক্ষেত্রপাল এর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।