দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: এসএসসির তরফে ‘দাগি’ শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে এক বিজেপি নেতার ছেলের! এই ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে। আর এই ঘটনা ছড়াতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তরজা।
ভাঙড় ১ নম্বর ব্লকের নারায়ণপুর হাইস্কুলের বাংলা বিভাগের সহ শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন অতনু মণ্ডল। তিনি সম্পর্কে বিজেপির যাদবপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি অবনী মণ্ডলের ছেলে। সম্প্রতি এসএসসির তরফে দাগি শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফার তালিকায় ২০০ নম্বরে নাম রয়েছে শিক্ষক অতনু মণ্ডলের। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি ওই স্কুলেই কর্মরত। বাংলার সহ শিক্ষক তিনি। স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যেও যথেষ্ঠ জনপ্রিয় বলে খবর।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছিল অতুন মণ্ডলের। সুপ্রিম কোর্টে মামলা শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্ট মাসিক বেতন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল চাকরিহারাদের। তবে আদালতের নির্দেশের পর অতুন আর স্কুলে যাননি বলে খবর। এবার দাগিদের তালিকায় তাঁর নাম প্রকাশিত হয়েছে। এই বিষয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু উলটো দিক থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। এসএমএস করা হলেও কোনও উত্তর আসেনি।
যদিও এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোড়। বিজেপি নেতার ছেলে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন! সেই বিষয়ে চলছে জোর চর্চা। বাবা অবনী মণ্ডল তথা বিজেপির যাদবপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দাগিদের তালিকায় ছেলের নাম থাকার বিষয় মানতে রাজি নন। তাঁর কথায়, “আমার ছেলে বরাবরই পড়াশুনায় ভালো। যথেষ্ট প্রতিভাবান। কতটা ভালো পড়াশুনো করান এবং স্কুলের শিক্ষক হিসেবে কেমন, তা ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই জানেন।”
তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা এই বিষয়ে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “যারা কথায় কথায় তৃণমূল নেতাদের দিকে আঙুল তোলে, তাদের বাড়ির ছেলেদেরই চাকরি চলে যাচ্ছে।” সিপিএম নেতা তুষার ঘোষ বলেন, “খোলা বাজারে চাকরি বিক্রি হয়েছে। যারা টাকা দিতে পেরেছেন, তাঁরা কিনে নিয়েছেন।” বিজেপি-তৃণমূল সকলেই আছে সেই দলে। আর অবনী মণ্ডলের ছেলেও খুব সম্ভবত সেভাবেই চাকরি পেয়েছেন।” নেতার ছেলের নাম দাগি-দের তালিকায় থাকায় টা হলেও অস্বস্তিতে যাদবপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।