• পিষে দিয়েই ক্ষান্ত হলেন না, পথ কুকুরকে রাস্তায় টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেলেন বাইক আরোহী! বীভৎস ভিডিও দেখে আঁতকে উঠল নেটপাড়া
    আজকাল | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  •  

    আজকাল ওয়েবডেস্ক: নাসিক ও পুনেতে পরপর দুটি নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা ঘিরে সম্প্রতি দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন আগে নাসিকের সাতপুর এলাকায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, এক ব্যক্তি একটি মৃত কুকুরকে মোটরসাইকেলের পেছনে বেঁধে রাস্তায় হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, কুকুরটিকে তিনি এর আগেই হত্যা করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় কুকুরটিকে পেছনে দড়ি দিয়ে বেধে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।  সেই দৃশ্য দেখে আশেপাশের আরও কিছু পথকুকুর তার পেছন পেছন দৌড়চ্ছে।

    ঘটনার জেরে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাতপুর থানায় একটি মামলা ইতিমধ্যেই দায়ের করা হয়েছে।  একইসঙ্গে পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। 

    অন্যদিকে, পুনেতে একইরকম আরেকটি নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। সেখানে একজন বাইক আরোহীকে দেখা গিয়েছে তাঁর নিজেরই পোষা কুকুরকে বাইকের হ্যান্ডেলে বাঁধা একটি ল্যাশের মাধ্যমে টেনে নিয়ে যেতে। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কুকুরটি বাধা দিচ্ছে, কষ্ট পাচ্ছে, কিন্তু বাইক চালক তবু থামছে না। বরং জোর করে কুকুরটিকে টানছে। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

    এই ঘটনাগুলোর সময়ই সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি তাদের আগের একটি নির্দেশনায় পরিবর্তন এনে জানিয়েছে, আগস্ট ১১ তারিখের আদেশ অনুযায়ী ধৃত কুকুরদের নির্বীজকরণ এবং টিকাদান শেষে পুনরায় ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে যেসব কুকুর জলাতঙ্কে আক্রান্ত বা অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক, সেগুলোর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে। বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা ও এনভি আঞ্জারিয়ার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ দিল্লি-এনসিআর ছাড়িয়ে পুরো দেশের জন্য এই নির্দেশ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়।

    এই দুই ঘটনার প্রেক্ষিতে পশু কল্যাণ সংস্থাগুলি আইন আরও কঠোরভাবে প্রয়োগের দাবি তুলেছে। তাদের বক্তব্য, এ ধরনের নিষ্ঠুর ঘটনা বারবার ঘটছে, যা প্রমাণ করে যে পথকুকুর ও পোষা প্রাণীদের সুরক্ষায় এখনও বড় ফাঁক রয়ে গিয়েছে।

    প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টে চলা পথকুকুর সংক্রান্ত একাধিক জনস্বার্থ মামলাকে নিজের অধীনে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মেঘালয় হাইকোর্টের আবেদন বেশ তাৎপর্যবাহী। মেঘালয়ে বেপরোয়া পথকুকুর সমস্যার বিষয়টি দেশের অন্যান্য জায়গার থেকে একেবারে আলাদা।

    গত ৩০শে আগস্ট, মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আইপি মুখার্জি এবং বিচারপতি ডব্লিউ ডিয়েংডোহের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের আদেশে জানিয়েছে যে, 'যদিও অন্যান্য হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে বেওয়ারিশ কুকুর সম্পর্কিত আবেদনের মধ্যে অনেক বিষয় একই রকম হতে পারে, আমরা মনে করি যে- আমাদের কর্তব্য হল এই বিষয়টি তুলে ধরা যে এই রাজ্যে বেওয়ারিশ কুকুরদের আক্রমণের মধ্যে একটি অদ্ভুত স্বতন্ত্রতা রয়েছে। এখানে একাধিক পথকুকুর অতিমাত্রায় হিংস্র। রাস্তাঘাটে, জনসমাগমস্থলে হঠাৎই তারা মানুষকে আক্রমণ করে বসছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই গুরুতর চোট লাগছে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা নির্দেশ দিয়েছিলাম, এই কুকুরদের ধরে টিকাকরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে নির্দিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রে কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণ ছাড়া তাদের আবার মুক্ত করে দেওয়া মানুষের জন্য মারাত্মক বিপদের কারণ হতে পারে।'
  • Link to this news (আজকাল)