• সদ্যজাতদের শরীরে এখান ওখান খুবলে খেয়েছিল ইঁদুর, হাসপাতাল নিয়ে ক্ষোভের মাঝেই প্রাণ গেল, কী সাফাই হাসপাতালের?...
    আজকাল | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রাণ বাঁচানোর জন্য গিয়েছিল। প্রাণ গেল সেখানেই। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, মধ্যপ্রদেশের হাসপাতালে যে দুই নবজাতককে ইঁদুর খুবলে খাওয়ার অভিযোগ উঠে এসেছিল, ওই দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল জানা গিয়েছিল, মধ্যপ্রদেশের ওই হাসপাতালের  ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ভিতরেই দুই সদ্যজাতকে ইঁদুরে শিরীরের নানা অংশে খুবলে খেয়েছে। খবর প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। যদিও জানা গিয়েছে, ঘটনা প্রসঙ্গে ওই হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট জানিয়েছেন, আঙুলে ইঁদুরের কামড় সামান্য ছিল। জন্মগত রক্তাল্পতার কারণে মৃত্যু হয়েছে। ১৫ দিন বয়স হয়েছিল ওই শিশুর, তার ওজন কম ছিল বলেও বক্তব্য তাঁর। বুধবার বিকেলে ইন্দোরের মহারাজা যশবন্তরাও হাসপাতালে ইঁদুরের কামড়ের পর ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। খান্ডোয়ার লক্ষ্মী এবং দেওয়াসের রেহানা - দুটি পরিবার রাজ্যের বৃহত্তম সরকারি হাসপাতালে গিয়েছিল, পরিণতি কী হতে চলেছে খাস হাসপাতালের ভিতরেই, কল্পনা ছিল না। 

    ঘটনা প্রসঙ্গে, এমওয়াই হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট অশোক যাদব বলেন, 'দুই শিশুরই জন্মগত রক্তাল্পতা ছিল এবং তাদের বাইরে থেকে রেফার করা হয়েছিল। একজনের ওজন ছিল ১ কেজি এবং অন্যজনের ওজন ছিল ১.৬ কেজি এবং হিমোগ্লোবিনও কম ছিল। শিশুদের শরীরে কামড়ের দাগ ছিল না তা নয়, কিন্তু তা মৃত্যুর কারণ ঘটায় না।' যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাফাই যাই দিক না কেন, এই ঘটনার পর থেকে তীব্র আলোড়োন। সূত্রের খবর, হাসপাতালের বেশকিছু কর্মী স্বীকার করে নিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালের নানা বিভাগে বড় মাপের ইঁদুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের নার্সিং টিম প্রথমে নবজাতকদের শরীরে বিভিন্ন ক্ষত দেখতে পায়৷ এমন দৃশ্য দেখার পর সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল প্রশাসনকে বিষয়টি জানান হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নবজাতকদের পাশে থাকা একটি দোলনায় কিছু ইঁদুর লাফালাফি করছে। খবর অনুযায়ী প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার। আর ঠিক তার পরদিন সোমবার আরও একটি অনুরূপ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।

    ঘটনার জেরে হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ড. অশোক যাদব স্বীকার করেছেন যে, হাসপাতালে সর্বশেষ পেস্ট কন্ট্রোল করা হয়েছিল পাঁচ বছর আগে। তিনি বলেন, 'গত ৪৮ ঘণ্টায় আইসিইউ-তে এক নবজাতকের আঙুলে ইঁদুরে কামড়েছে। অন্য এক শিশুর মাথা এবং কাঁধে কামড়ের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। শিশুরা এখন সুরক্ষিত এবং তাদের নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসা চলছে। আমরা খুব শিগগিরই পুরো হাসপাতালে বড় ধরনের পেস্ট কন্ট্রোল অভিযান চালাব। রোগীর আত্মীয়দেরও অনুরোধ করা হয়েছে যাতে তাঁরা ওয়ার্ডে খাবার না আনেন, কারণ এটি ইঁদুরকে আকর্ষণ করে।'

    মঙ্গলবারেই জানা যায়, হাসপাতালের আরেক সিনিয়র চিকিৎসক ড. ব্রজেশ লাহোটি এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বলেন, 'হাসপাতালে ইঁদুরের সংখ্যা অত্যন্ত বেশি। কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লোহার জাল বসানো হচ্ছে, এবং বড় পরিসরে পেস্ট কন্ট্রোলের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।'

    প্রসঙ্গত মধ্যপ্রদেশের সরকারি হাসপাতালে এহেন ইঁদুরের উৎপাতের ঘটনা নতুন কিছু নয়। ২০২৩ সালেই রাজ্যের একাধিক মর্গে মৃতদেহে ইঁদুরে কামড় দেওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। জুন মাসে ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালে এক ৫০ বছর বয়সী মৃত ব্যক্তির কান ইঁদুরে কেটে দেয়। মে মাসে বিদিশা জেলা হাসপাতালে এক ৭০ বছর বয়সী দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তির মৃতদেহের নাক ও হাত ইঁদুরে ছিঁড়ে খায়। খবর অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সাগর জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা দুইটি মৃতদেহের চোখ ইঁদুরে খেয়ে ফেলে।

     
  • Link to this news (আজকাল)