• বিষ নয় স্যার, পালানোর জন্য ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছিলাম, দুই বৌয়ের অকপট স্বীকারোক্তি...
    আজকাল | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গিয়েও শেষরক্ষা হল না। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেপ্তার করল বাগদার দুই বৌকে। সোমবার ১ আগস্ট পাড়ার এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন দু'জনেই। বাড়ি ফিরে তাঁদের স্বামীরা দেখেন ঘরের সবাই ঘুমে অচেতন। বৌদের কোনো পাত্তা নেই। বুঝতে পারেন বিষাক্ত কিছু খাওয়ানোর ফলেই তাঁরা জ্ঞান হারিয়েছেন। জানতে পারেন স্থানীয় যুবক আরিফ মোল্লার সঙ্গে পালিয়েছেন তাঁদের স্ত্রীরা। পুলিশের দ্বারস্থ হন এক বৌয়ের স্বামী আনিসুর শেখ। মঙ্গলবার রাতেই দুই বৌকে ধরে ফেলে পুলিশ। আরিফের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। বুধবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হবে।

    এদিন দুই বৌকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় চায়ের সঙ্গে কেন তাঁরা বিষ মিশিয়েছিলেন তখন তাঁরা দুজনেই দাবি করেন, বিষ নয়। পালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁরা চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও অন্যদের খাইয়েছিলেন। দু'জনের বক্তব্যই যাচাই করে দেখছে পুলিশ। সেইসঙ্গে পরীক্ষা করে দেখা হবে চায়ের কাপের অবশিষ্ট পানীয়। প্রসঙ্গত, দুই বৌয়েরই সন্তান আছে। এর আগেও এই দু'জন আরিফের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেবার ধরা পড়ার পর এঁদের আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল সন্তানদের কথা ভেবে। কিন্তু এবার আনিসুরের বাড়ির লোক তাঁদের ফিরিয়ে নেবেন কি না সেই নিয়ে এলাকার লোক যথেষ্টই সন্দিহান। 

    আনিসুর নিজে একটি গ্যারেজের কর্মী। আরিফের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর বৌদির যে একটা গোপন সম্পর্ক আছে সেটা তাঁর এবং বাড়ির অন্যান্যদের কাছে অজানা ছিল না। সোমবার যখন এসে তিনি দেখেন তাঁর বাবা-মা এবং বাড়ির সবাই অচেতন অবস্থায় পড়ে তখন তিনি আগে সবাইকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরেরদিন সকলের জ্ঞান ফিরলে তাঁরা জানান, চা খাওয়ার পরেই তাঁদের আর কিছু মনে নেই। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর পুলিশ মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন দেখে রাতেই দুই বৌকে গ্রেপ্তার করে। 

    অন্যদিকে আরিফ নিজে বিবাহিত এবং তার সন্তানও আছে। ঘটনার পর তার স্ত্রী সোনিয়া মোল্লা জানিয়েছেন, তিনি চান আরিফের যেন কঠিন শাস্তি হয়। বারবার সে এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। তার স্ত্রীর দাবি, 'আমি বুঝতাম ওই দুই বৌয়ের সঙ্গে আরিফের একটা সম্পর্ক আছে। কিন্তু আমার এবং আমার বাচ্চার একটা জীবন আছে। আমি চাই আরিফের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।'

    অন্যদিকে জানা গিয়েছে, ওষুধের প্রভাবে এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি আনিসুরের বৃদ্ধ বাবা ও মা। মঙ্গলবার হাসপাতালে তাঁদের জ্ঞান ফেরার পর তাঁরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় আরিফ তাঁদের বাড়িতে এসে দুই বৌকে কিছু একটা দিয়ে গিয়েছিল। এরপর দুই বৌ চা বানিয়ে তাঁদের দেয়। সেই চা খাওয়ার কিছুক্ষন পর আর তাঁদের কিছু মনে নেই। সকালে যখন জ্ঞান ফেরে তখন দেখেন হাসপাতালে শুয়ে আছেন। সেখানেই তাঁরা জানতে পারেন আরিফ তাঁদের বাড়ির দুই বৌকে নিয়ে চম্পট দিয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বিষয়টি যদি এখানেই মিটে যায় তবে ভালো কিন্তু যেভাবে বারবার পালিয়ে যাচ্ছে সেখানে কীভাবে বলা যায় যে ভবিষ্যতে আবার তারা পালাবে না?
  • Link to this news (আজকাল)