• 'ওই আমার মেয়েকে খুন করেছে', শনাক্ত করতে গিয়ে সংশোধনাগারেই দেশরাজকে চড় কষাতে গেলেন ঈশিতার মা...
    আজকাল | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিনকয়েক আগের ঘটনা। ঘটনার ভয়াবহতায় শিউরে উঠেছিল গোতা রাজ্য।  কৃষ্ণনগরের বহুল আলোচিত ঈশিতা মল্লিক খুনকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত দেশরাজ সিংকে শনাক্ত করলেন মৃতার মা কুসুম মল্লিক। বুধবার সন্ধ্যায় কৃষ্ণনগর জেলা সংশোধনাগারে শনাক্তকরণ পর্বে অভিযুক্তকে দেখেই চিনতে পারেন তিনি। সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, শনাক্তকরণের পর্বে দেশরাজকে দেখতে পেয়ে তিনি বলে ওঠেন, 'ওই আমার মেয়েকে খুন করেছে।' একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি এগিয়ে গিয়ে দেশরাজকে চড় কষাতে যান। শেষপর্যন্ত নিরস্ত করা হয় তাঁকে।

    এদিন মায়ের চোখে ছিল একরাশ ক্ষোভ। সংশোধনাগারের বাইরে এসে তিনি বলেন, 'এই ছেলেটাই আমার মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করেছে। তাকে দেখামাত্রই মনে হচ্ছিল চড় কষিয়ে দিই। ওর যেন দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয়। ওর ফাঁসি চাই।' রীতিমতো রাগের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানান কুসুম মল্লিক।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তদন্ত প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবে পুলিশ অভিযুক্ত দেশরাজ সিংকে সংশোধনাগারে হাজির করে পরিবারের সামনে। তৎক্ষণাৎ ঈশিতার মা তাকে চিনে ফেলেন।পুলিশ সূত্রে খবর, মামলার তদন্ত  অনেকটাই গভীরে পৌঁছেছে। সে ক্ষেত্রে শনাক্তকরণ পর্ব গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবেই গণ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।  মামলা যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয় এবং সমস্ত কিছু প্রমাণ সংগ্রহ করে মামলার গতিপ্রকৃতি ত্বরান্বিত করা যায় সেজন্য বুধবার সেদিনের ঘটনার অন্যতম সাক্ষী নিহত ওই কলেজ ছাত্রীর মাকে হাজির করানো হয়েছিল কৃষ্ণনগর সংশোধনাগারে। 

    গত ২৫ আগস্ট কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়া এলাকার বাসিন্দা দুলাল মল্লিকের বাড়িতে ঢুকে তাঁর কন্যা কলেজ ছাত্রী ঈশিতা মল্লিককে (১৯) খুন করার অভিযোগ ওঠে দেশরাজের বিরুদ্ধে। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ঈশিতাকে খুন করা হয়। অভিযোগ, প্রেমে ব্যর্থ হয়েই দেশরাজ ওই কলেজ ছাত্রীকে খুন করে। ঈশিতা কৃষ্ণনগর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ঘটনার পর ওই এলাকায় একদিকে যেমন আতঙ্ক ছড়ায় তেমনি শোকসন্তপ্ত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। 

    এই ঘটনার পর পালিয়ে যায় দেশরাজ। তার খোঁজে বিভিন্ন এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। এরপর গুজরাটের জামনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দেশরাজের মামা কুলদীপ সিংহকে। তাকে জেরা করে একের পর এক তথ্য উঠে আসে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের সামনে। জানা যায়, ভাগ্নেকে পুলিশ থেকে রক্ষা করতে নানারকম পরিকল্পনা করেছিল কুলদীপ। দেশরাজকে বাঁচানোর জন্য একাধিক জাল ডকুমেন্ট তৈরি থেকে গা-ঢাকা দিতে সাহায্য করেছিল সে। তৈরি করেছিল নকল পরিচয়পত্র। কুলদীপের ফোন ট্র্যাক করেই জানা যায় দেশরাজের অবস্থান। 

    পুলিশ জানতে পারে নকল আধার কার্ড বানিয়ে এদেশ ছেড়ে উত্তরপ্রদেশ হয়ে নেপাল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে দেশরাজ। সেইমতো কৃষ্ণনগর পুলিশের একটি বিশেষ দল উত্তরপ্রদেশ রওনা হয়। একেবারে শেষমুহূর্তে সীমান্তের কাছ থেকে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় দেশরাজ। সেখান থেকে তাকে নিয়ে রাজ্যে ফেরে পুলিশ।
  • Link to this news (আজকাল)