যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি নেতাকে ‘হেনস্তা’, বিস্ফোরক অভিযোগে চাঞ্চল্য
প্রতিদিন | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রমেন দাস: ফের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েই হেনস্তার অভিযোগ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগে সরব শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতারা। দাবি, প্রকাশ্যে সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি (TMCP) নেতাকে মৌখিক হেনস্তা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের নানাভাবে অসুবিধার সম্মুখীন করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সবক্ষেত্রেই অভিযুক্ত এসএফআই (SFI)।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) টিএমসিপি ইউনিটের তরফে বিবৃতি দিয়ে এই অভিযোগে সরব হয়েছেন ছাত্রনেতারা। ইতিমধ্যেই কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক তীর্থরাজ বর্ধনের অভিযোগ, ‘আমাদের ইউনিট সভাপতি কিশলয় রায় সম্পর্কে কুমন্তব্য করা হয়েছে। প্রকাশ্যে সভায় তাঁর মানহানি হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিরন্তর বামপন্থী ছাত্র সংগঠন না করলে ক্যাম্পাসে একটা চাপের পরিবেশ তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে বিড়ম্বনায় ফেলার। কিন্তু আগের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এই ক্যাম্পাসে তাদের জমি শক্ত করেছে, এই বিষয়টি মেনে নেওয়া নয়, আমরা প্রমাণ চাইব, কেন এমন বলা হল!’ প্রায় একই সুরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা কিশলয় রায়ের অভিযোগ, ‘আমাকে নির্যাতক বলা হচ্ছে। আমাদের বহু সদস্যকে অযথা মৌখিক আক্রমণ করা হচ্ছে। যা বরাবর বামেদের ওই ছাত্র সংগঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শুধু তারাই রাজনীতি করবে, বাকিরা এলেই গাত্রদাহ হয়! অত্যাচারের নানা পন্থা অবলম্বন করা হয়। যাতে অন্যরা রাজনীতি করতে না পারে। ওরা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেও এসব করে। এর প্রতিবাদ করছি, আমাদের জনসমর্থন এই ক্যাম্পাসে বেড়েছে বলেই এই অবস্থা। এসএফআই চেষ্টা করছে হেনস্তা, কুমন্তব্য করে আমাদের দমিয়ে রাখতে। সেটা ওরা পারবে না।’
শাসকদল তৃণমূল। আর তাঁদেরই ছাত্রনেতাদের এমন অভিযোগে শোরগোল পড়েছে। যদিও এই প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতা রাসেল পারভেজের দাবি, ‘পুরোটাই ভিত্তিহীন। আসলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা গত ১ সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের মিটিং চলছিল, সেখানে গিয়ে চড়াও হন। দুর্ব্যবহার করেন। ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের সদস্যদের মৌখিক হেনস্তা করেন। সেটার প্রতিবাদ হয়েছে। আমরা এর তীব্র ধিক্কার জানাই। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ যদি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের, শিক্ষকদের এরকম হেনস্তা করতে আসে তাহলে এসএফআই ঢাল হয়ে রুখে দাঁড়াবে।’ কিন্তু অন্য রাজনীতির ছাত্রদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য, মৌখিক হেনস্তা অগণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির অভিযোগ কেন? রাসেলের দাবি, ‘তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এখানকার ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা অনেকে আগেই বিতাড়িত। তারা বাইরে গুন্ডামি করে, আমরা রাজনৈতিক আদর্শ মেনে প্রতিরোধ করি। সেটা হয়তো পছন্দ হচ্ছে না। তাই এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ!’
বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়-রাজনীতির দুনিয়ায় যাদবপুর বরাবর বাম-অতিবাম ছাত্র সংগঠনের শক্ত ঘাঁটি। ক্যাম্পাসে তাদের দাপট চোখে পড়ার মতো। ঠিক এই আবহে দাঁড়িয়ে বাম বিরোধী রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের তরফে গাজোয়ারির অভিযোগ ওঠে একাধিকবার! পালটা যুক্তি দেন বামপন্থী ছাত্রনেতারাও। ঠিক এই অবস্থায় স্বয়ং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এমন অভিযোগ ফের তৈরি করেছে রাজনৈতিক বিতর্কও।