• ‘ক্ষমতাশালী বৃত্তে যুক্ত’, সুজয়কৃষ্ণের স্থায়ী জামিন আটকাতে হাই কোর্টে মরিয়া সিবিআই
    প্রতিদিন | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • গোবিন্দ রায়: পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ক্ষমতাশালী বৃত্তের সঙ্গে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জুড়ে রয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। বুধবার তাঁর স্থায়ী জামিনের বিরোধিতায় হাই কোর্টে বিস্ফোরক দাবি সিবিআইয়ের। হাই কোর্টের নির্দেশে গৃহবন্দি রয়েছেন তিনি। কিন্তু তা আর থাকতে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে স্থায়ী জামিনে মুক্তি পেতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। কিন্তু তা আটকাতে মরিয়া সিবিআই।

    সুজয়কৃষ্ণের জামিন আটকানোর জন্য বুধবার বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের বেঞ্চে সওয়াল করেছে সিবিআই। প্রাথমিকে নিয়োগকাণ্ডে সুজয়কৃষ্ণের ‘ভূমিকা’ নিয়ে তথ্যও দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে। সিবিআইয়েই আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বুধবার জানান, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মাথায় পৌঁছোতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তদন্তের সেই অংশ এখন খতিয়ে দেখছে সিবিআই। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ক্ষমতাশালী বৃত্তের সঙ্গে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জুড়ে রয়েছেন তিনি। এই ক্ষমতাশালী বৃত্তই নিয়োগ দুর্নীতির জাল বুনেছে। এই জালেই ভুয়ো চাকরির সুপারিশ পত্র, নিয়োগপত্র তৈরি করা হয়েছে। তাই সুজয়কৃষ্ণকে স্বাধীন ভাবে চলাফেরার অনুমতি দেওয়ায় আপত্তি রয়েছে। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘বিস্ফোরক তথ্য’ হাই কোর্টকে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। ৮ সেপ্টেম্বর সুজয়কৃষ্ণের জামিনের আবেদনের মামলার আবার শুনানি হবে হাই কোর্টে।

    উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন ‘কালীঘাটের কাকু’। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির কয়েকশো কোটি টাকা লেনদেন প্রায় সবই জানা ছিল তাঁর। কীভাবে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলা হবে, অযোগ‌্য প্রার্থীদের তালিকা কোন কোন জায়গায় পাঠাতে হবে, সেই পরিকল্পনা করতে সুজয়কৃষ্ণ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে যেতেন। পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর অফিসে বসেই নিয়োগ দুর্নীতির ছক কষতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁরই নির্দেশে কুন্তল, তাপসদের হাত দিয়ে টাকা যেত। এমনকী, সুজয়কৃষ্ণ পার্থ চট্টোপাধ‌্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন।

    ইডির গোয়েন্দাদের মতে, সুজয়কৃষ্ণর যে তিনটি সংস্থার সন্ধান পাওয়া যায়, সেগুলির মাধ‌্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। সে কারণে তাকে জেলবন্দি করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এর আগে একাধিকবার বেহালার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র জামিনের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একাধিক যুক্তিতে বারবার তা খারিজ হয়েছে। অবশেষে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা হাই কোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। তবে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সুজয়কৃষ্ণবাবুকে জামিনের একাধিক শর্ত বেঁধে দিয়েছিলেন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)