আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৫ আগস্ট। লালকেল্লা থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন, 'এই দিওয়ালিতে, আপনাদের দ্বিগুন-দিওয়ালির কাজ করব আমি। এই দিওয়ালিতে দেশবাসীকে বড় উপহার মিলবে।' তারপর একমাসও কাটেনি। মাঝে নয়া কর ব্যবস্থা কেমন হতে চলেছে, কোন কোন স্ল্যাব থাকবে, নাকি বদল যাবে গোটা কাঠামো, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। নজর ছিল বুধ সন্ধের দিকে। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, শিলমোহর জল্পনাতেই। বদলে গেল ভারতের কর কাঠামো। চার স্তরের কর ব্যবস্থা সরল হল অপেক্ষাকৃত, থাকবে এবার থেকে কেবল দুই স্তরের কর কাঠামো।
এই মুহূর্তে ভারতে দ্রব্যাদির উপর মোট চারটি ভাগে জিএসটি কার্যকর। ৫ শতাংশ, ১২ শতাংশ, ১৮ শতাংশ এবং ২৮ শতাংশ। সূত্রের খবর, জল্পনা মোতাবেক, ১২ এবং ২৮ শতাংশের স্ল্যাব বাদ যাচ্ছে নয়া কর কাঠামো থেকে, থাকবে কেবল ৫ এবং ১৮ শতাংশ। আগেই জল্পনা ছিল, এই দুই স্ল্যাব বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে, ১২ শতাংশ জিএসটি ধার্য হয় এখন যেসব দ্রব্যের উপর, তার মধ্যে ৯৯ শতাংশ দ্রব্যের উপরে ৫ শতাংশ আরোপ হতে পারে এবং যেসব দ্রব্যের উপর এতদিন ২৮ শতাংশ আরোপিত হত, সেগুলির মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ দ্রুব্যের উপরেই ১৮ শতাংশ ধার্য হতে পারে।
এসবের মাঝে নজর ছিল বুধবারের বৈঠকের দিকে। গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি) কাউন্সিল বুধবার থেকে দুই দিনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শুরু করেছে। এই বৈঠকের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এমন এক প্রস্তাব যা ভারতের কর কাঠামোকে আমূল পরিবর্তন করতে পারে। সূত্রের খবর, বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল বর্তমান চার-স্তরের কর ব্যবস্থা সরল করে মাত্র দুটি স্ল্যাবে নামিয়ে আনা ৫% এবং ১৮%।
বুধবার সন্ধেয় জানা গেল, জিএসটি কাউন্সিল ৫ এবং ১৮% এর দ্বি-স্তরের হার কাঠামো অনুমোদন করেছে, যা ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকরী হবে। বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, সমস্ত রাজ্য হার যৌক্তিকীকরণের পক্ষে ছিল এবং এটি একটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত।
পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, জিএসটি হার যৌক্তিকীকরণের কারণে মোট ক্ষতি হবে ₹৪৭,৭০০ কোটি। উত্তর প্রদেশের অর্থমন্ত্রী সুরেশ খান্নার এই প্রসঙ্গে মতামত, 'অসম্পূর্ণ পণ্যের উপর করের ঘটনা সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এবং ৪০% এর বেশি কর আরোপের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।' ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন নরেন্দ্র মোদি।
সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী, বর্তমানে ১২% হারে কর বসা প্রায় সব পণ্য যেমন ঘি, বাদাম, প্যাকেজড পানীয় জল, নন-অ্যারেটেড পানীয়, নেমকিন, ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম—৫% স্ল্যাবে চলে আসবে। পেন্সিল, সাইকেল, ছাতা ও হেয়ারপিনের মতো সাধারণ গৃহস্থালি সামগ্রীতেও কর কমে যাবে, যা ভোক্তাদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে। ইলেকট্রনিক্স ও ভোগ্যপণ্যও সস্তা হতে পারে। বর্তমানে ২৮% হারে কর বসা টেলিভিশনের কিছু মডেল, ওয়াশিং মেশিন ও ফ্রিজকে ১৮% স্ল্যাবে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। ছোট গাড়ি ও এয়ার কন্ডিশনারেও কর কমার সম্ভাবনা রয়েছে। বিলাসবহুল ও “সিন” (ক্ষতিকর) পণ্যে কর বাড়ানো হবে। বর্তমানে ২৮% জিএসটি ও ক্ষতিপূরণ সেস বসা বিলাসবহুল গাড়ি, প্রিমিয়াম এসইউভি এবং অন্যান্য উচ্চমানের যানবাহনকে নতুন ৪০% স্ল্যাবে আনা হতে পারে বলে খবর সূত্রের।