ধসে বন্ধ হাইওয়ে, কাশ্মীরে অগ্নিমূল্য বাজারে নাকাল জনতা থেকে ব্যবসায়ী, বিয়ের মরশুমে একের পর এক বিপর্যয়
বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ফিরদৌস হাসান, শ্রীনগর: একে বিয়ের মরশুম। তার উপর কাশ্মীর উপত্যকার কমবেশি প্রতি ঘরেই উৎসবের তোড়জোড় তুঙ্গে। তবে সপ্তাহখানেক ধরে লাগাতার বৃষ্টির জেরে সবজি, চিকেন, ডিম থেকে শুরু করে ফলের বাজারও আগুন। চাহিদামতো জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আর অগ্নিমূল্যের বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়ে পকেটে ফোস্কা পড়ছে আম জনতার।
কাশ্মীরে সাধারণত আগস্ট মাস থেকে বিয়ের মরশুম শুরু। চলবে নভেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এই পর্বেই বৃষ্টি আর ধসের জেরে হাইওয়ে বন্ধ। ফলে বাইরে থেকে উপত্যকায় ঢুকছে না নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা সামগ্রী। তার জন্যই বাড়ছে দাম। সপ্তাহখানেক আগেও প্রতি কেজি চিকেনের দাম ছিল ১৩০ টাকা। এখন সেই দাম বেড়ে ১৯০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। দাম বেড়েছে ডিমেরও। এখন এক ট্রে ডিমের দাম পড়ছে ২২০ টাকা। সবজির মধ্যে প্রতি কেজি টম্যাটোর দাম আগে ৫০ টাকা ছিল। সেই দাম এখন বেড়ে ৮০ টাকা। আসলে বিয়ের মরশুমে নানা ধরনের লোভনীয় খাবারের জন্য যা যা উপকরণ প্রয়োজন, চড়া দামের কারণে গুণমানের সঙ্গে সমঝোতা করতে হচ্ছে রাঁধুনিদের। স্বাভাবিকভাবেই এর জেরে ফাঁপড়ে পড়ছেন বাড়িতে বিবাহ অনুষ্ঠান থাকা মানুষজন। বিবাহ মরশুমে শেফদের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। মূল্যবৃদ্ধির জেরে তাঁদেরও বেজায় সমস্যা। কাশ্মীরি ‘ওয়াজবান’ শেফ বসির আহমেদ বলেন, ‘কিছু কিছু রান্নার সরঞ্জামের দাম দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। কাজেই দামের সঙ্গে মিলিয়ে খাবারের মানের সাযুজ্য রাখা বড়ই দুষ্কর হয়ে উঠেছে। যদি হাইওয়ে না খোলে তাহলে ঐতিহ্যবাহী খাবারের আগের মতো লোভনীয় স্বাদ আর যথার্থ মান বজায় রেখে সঙ্গে পরিবেশন করা সম্ভব হবে না।’ কাশ্মীরে বিবাহ অনুষ্ঠান এক বিশাল বড় উৎসব। আর দিনক্ষণ ঠিক তো হয়ে গিয়েছে মাস দুয়েক আগেই। বেমিনার বাসিন্দা সুলেমান খান বলেন, ‘চলতি সপ্তাহেই আমাদের বাড়িতে বিয়ে রয়েছে। অতিথিদের আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় আমাদের ঐতিহ্যবাহী মেনুতে অদলবদল করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। অথচ বাজারের যা চড়া দাম, তাতে বিয়ের খরচ প্রায় দ্বিগুণ হতে চলেছে।’ সুলেমানের মতো শাজিয়া বানো বলেন, ‘চলতি মাসের শেষে আমার ভাইয়ের বিয়ে। অগ্নিমূল্যের জেরে আমাদের মতো আর অনেকেরই অবস্থা শোচনীয়। প্রত্যেক বাড়িতেই অনুষ্ঠানের দিন ঠিক হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে তাতে হাইওয়ে বন্ধ থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যাবে।’ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, জোরকদমে হাইওয়ে সংস্কারের কাজ চলছে। পাশাপাশি বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণেরও চেষ্টা করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।