তিন দিনে পড়ল ধর্মঘট, মিছিল অস্থায়ী কর্মীদের, জঞ্জালের স্তূপে ঢাকা পড়ছে পুরুলিয়া শহর
বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: পুরুলিয়া পুরসভার সাফাই কর্মীদের ডাকা ধর্মঘট বুধবার তিনদিনে পড়ল। ধর্মঘটের জেরে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়েছে শহরের বাসিন্দাদের। বাড়ি থেকে জঞ্জাল সংগ্রহ বন্ধ রেখেছেন সাফাই কর্মীরা। পরিষ্কার হচ্ছে না শহরের আবর্জনাও। চারিদিকে জঞ্জালের স্তূপ। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা বাজারগুলির। রোগ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে আতঙ্কিত শহরবাসী। যদিও এনিয়ে পুরকর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোলই নেই বলে অভিযোগ। এমনকী, সাফাই কর্মীদের সঙ্গে এনিয়ে আলোচনা করেননি পুর প্রতিনিধিরা। এই পরিস্থিতিতে বুধবার শহরে মিছিল বের করেন সাফাই কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে মিছিলে জল, বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য বিভাগের অস্থায়ীও কর্মীরাও যোগ দেন।
বুধবার শহরের গাড়িখানার জঞ্জাল বিভাগের শেড থেকে পুরসভা পর্যন্ত মিছিল করেন অস্থায়ী কর্মীরা। বকেয়া দু’মাসের বেতনের পাশাপাশি পুজোর বোনাস ও বেতন বৃদ্ধির দাবি তাঁরা জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, চেয়ারম্যানের ভূমিকায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁর পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছেন। সাফাই বিভাগের অস্থায়ী কর্মীদের সংগঠনের নেতা সরোজিৎ স্যামুয়েল বলেন, ‘চেয়ারম্যানই আমাদের আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছেন। আমাদের যে টাকা বেতন দেওয়া হয়, সেই টাকায় সংসার চলে না। শরীর খারাপ হলে চিকিত্সা করানোর সামর্থ্যও থাকে না। পুজোর মুখে বোনাস দেওয়া হয় মাত্র ১৬০০ টাকা। অথচ যাঁরা হোটেল, চায়ের দোকানে কাজ করেন, তাঁরা এর থেকে বেশি টাকা পান।’ সাফাই কর্মীরা জানাচ্ছেন, দৈনিক ১২০ টাকা হারে তাঁদের মাসে মাত্র ৩৬০০ টাকা বেতন দেওয়া হয়। রাজ্যের আর কোনও পুরসভায় এত কম টাকা বেতন দেওয়া হয় না। সুধাংশু ঘোষাল নামের আরএক কর্মী বলেন, ‘আমাদের বেতন বৃদ্ধি না করলে আমরা কাজেই নামব না।’ কিন্তু, এতে তো সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। যদিও তাঁর জবাব, পড়বে তো বটেই। কিন্তু, শহরবাসীরও তো আমাদের বিষয়টি ভাবা দরকার। তাঁদের কতজন আমাদের হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন? কতজন আমাদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন?আরএক অস্থায়ী কর্মী বলেন, আমাদের যে আজ রাস্তায় নামতে হয়েছে এর দায় ২৩টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলারদের উপরেও বর্তায়। তাঁরা কেন আমাদের সঙ্গে কথা বলতে এলেন না? চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালি বলেন, আমার শরীর প্রচণ্ড অসুস্থ। আমি পুরসভায় যেতে পাচ্ছি না। কাউন্সিলারদের সঙ্গে এব্যাপারে কথা হয়েছে। কাউন্সিলার তথা তৃণমূলের শহর সভাপতি প্রদীপ ডাগা বলেন, চেয়ারম্যানের কথামতো বৃহস্পতিবার কাউন্সিলারদের একটি প্রতিনিধি দল সাফাই কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। তাঁদের সুবিধা অসুবিধা শোনা হবে। তাছাড়া, জুলাই মাসের বকেয়া বেতন রেডি আছে। দু’-একদিনের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়া হবে।
কাউন্সিলার বিভাসরঞ্জন দাস যদিও বলেন, আমি নিজে বিষয়টি পুরুলিয়ার মহকুমা শাসককে জানিয়েছি। তাঁর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছি।