বাঁকুড়ায় কমছে অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা পরিবার পাবে এবার মুরগির বাচ্চা
বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বাঁকুড়া জেলায় শিশুদের অপুষ্টির হার আগের চেয়ে অনেকটাই কমেছে। বর্তমানে জেলায় ১৯৪৬ জন শিশুর শরীরে পুষ্টির অভাব ও স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন কম রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অপুষ্ট শিশু রয়েছে জঙ্গলমহলের ব্লকগুলিতে। বিশেষ করে রানিবাঁধ, রাইপুর ও সারেঙ্গায় অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা সর্বাধিক। প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট শিশুদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে পাকা কলা দেওয়া হচ্ছে। এবার বাঁকুড়ায় শিশুদের অপুষ্টির হার কমাতে জেলা প্রশাসনের তরফে বিনামূল্যে মুরগির বাচ্চা দেওয়া হবে। বাড়ির লোকজন তা পালন করবেন। শিশুর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মুরগির বাচ্চাও বড় হবে। তখন তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ মাংস খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে জেলায় অপুষ্টির হার কমাতে জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
বাঁকুড়া জেলা অতিরিক্ত জেলাশাসক(উন্নয়ন) অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, আমাদের জেলায় শিশুদের অপুষ্টির হার আগের চেয়ে অনেকটাই কমেছে। তা আরও কমানোর জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিশুদের প্রোটিন সাপ্লিমেন্টের জন্য প্রতি অপুষ্ট শিশুর পরিবারকে ১০টি করে মুরগির বাচ্চা বিনামূল্যে দেওয়া হবে। পরিবারের লোকজন তা পালন করবেন।
বাঁকুড়া জেলা সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের এক আধিকারিক বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নিয়মিত পরিপূরক পুষ্টি দেওয়ার ফলে আমাদের জেলায় অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা ক্রমশ নিম্নমুখী। আগে জেলায় দু’হাজারের বেশি অপুষ্ট শিশু ছিল। জঙ্গলমহলের ব্লকগুলিতে এখনও বেশ কিছু অপুষ্ট শিশু রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার ১৯৪৬জন চিহ্নিত অপুষ্ট শিশুকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে পাকা কলা দেওয়া হচ্ছে। এবার প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহায়তায় জেলা প্রশাসনের তরফে তাদের পরিবারের হাতে মুরগির বাচ্চা তুলে দেওয়া হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নিয়মিত ওজনের মাধ্যমে শিশুদের অপুষ্টির তালিকা তৈরি হয়। তাতে চরম অপুষ্ট অথবা স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন কম রয়েছে, এমন শিশুদের চিহ্নিত করে তাদের জন্য বিশেষ খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়। সম্প্রতি গোটা জেলায় মোট ১৯৪৬জন এরকম অপুষ্ট শিশুকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে আইসিডিএসের বাঁকুড়া-১ প্রকল্পের ১৭জন, বাঁকুড়া-২এ ৪৬জন, বাঁকুড়া শহরে একজন, ছাতনায় ৩৭, শালতোড়ায় ২৩, মেজিয়ায় ৩১, গঙ্গাজলঘাটিতে ৩৭, বড়জোড়ায় ৭১, ওন্দায় ১৪৪, ইন্দপুরে ৫৫, তালডাংরায় ১৩৫, সিমলাপালে ২৬, সারেঙ্গায় ১৬৪, রাইপুরে ১৮৬, রানিবাঁধে ২৮৮, খাতড়া-১ এ ১২৪, খাতড়া-২এ ৩০, বিষ্ণুপুরে ৪৫, জয়পুরে ৭৫, কোতুলপুরে ৯৬, ইন্দাসে ১৩৯, পাত্রসায়রে ৮০ এবং সোনামুখীতে ৯৬জন রয়েছে। এদের প্রত্যেকের পরিবারের হাতে আগামী ১৯সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১০টি করে মুরগির বাচ্চা বিলি করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।