২১ জনের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি পদাধিকারীর মধ্যে দক্ষিণের ১২, দলে ক্ষোভ
বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির ২১জন পদাধিকারীর তালিকায় দক্ষিণ কাঁথির ১২জন নেতানেত্রীকে পুনর্বাসন দেওয়া হল। মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটির তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তালিকায় দক্ষিণ কাঁথির আধিপত্য নিয়ে দলের ভিতর বিতর্কের ঝড় শুরু হয়েছে। ওই সাংগঠনিক জেলার অধীন মোট সাতটি বিধানসভা পড়ে। সাধারণত, বিধানসভা প্রতি তিন থেকে সর্বাধিক চারজন পদাধিকারী তালিকায় জায়গা পান। কিন্তু, কাঁথি সাংগঠনিক জেলা কমিটির তালিকায় প্রচলিত নিয়ম মানা হয়নি। বরং, অন্যান্য বিধানসভা থেকে এক-দু’জনকে ঠাঁই দিয়ে একচেটিয়া দক্ষিণ কাঁথির নেতাদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, কমিটিতে পুরনো দিনের নেতাদের ছেঁটে দাদার অনুগামীদেরই ‘জয়যাত্রা’ শুরু হয়েছে।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি ছাড়াও একজন সাধারণ সম্পাদক, পাঁচজন সহ সভাপতি এবং পাঁচজন সম্পাদক দক্ষিণ কাঁথির বাসিন্দা। ২১জনের তালিকায় কীভাবে একটা বিধানসভা থেকে ১২জন স্থান পেলেন তানিয়ে দলের ভিতর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কোনও কোনও বিজেপি নেতা কটাক্ষ করে বলছেন, দক্ষিণ কাঁথি থেকেই গোটা কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় দলকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তালিকা থেকেই সেটা পরিষ্কার। এতে অন্যান্য বিধানসভার কর্মীরা হতাশ হবেন। এটাই স্বাভাবিক।
জেলা বিজেপি সভাপতি সোমনাথ রায় কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভার বাসিন্দা। এছাড়া, নতুন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীও দক্ষিণ কাঁথির বাসিন্দা। কমিটিতে মোট আটজন জেলা সহ সভাপতি আছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনই ওই বিধানসভার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন, সুতপা চক্রবর্তী, বনশ্রী মাইতি, অসীম মিশ্র, মুনমুন দাস ও ধীরেন্দ্রনাথ পাত্র। এছাড়াও জেলা কমিটির ন’জন সম্পাদকের মধ্যে পাঁচজন ওই বিধানসভার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন, পবিত্র দাস, সুশীল দাস, তাপস দোলাই, প্রভাকর চৌধুরী ও নবীন প্রধান দক্ষিণ কাঁথির বাসিন্দা।
মৌমিতা দাস, বিষ্ণুপদ মাইতি, কল্লোল কর, অরিন্দম আদকের মতো পুরনো দিনের নেতানেত্রীরা জেলা কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। মৌমিতাদেবী বলেন, ২০২০সাল মহিলা সভানেত্রী ছিলাম। তারপর দু’টি টার্মে রামনগর বিধানসভা এলাকা থেকে জেলা কমিটির সহ সভানেত্রী ছিলাম। কী অপরাধ করলাম জানি না। এবার বাদ পড়ে গেলাম। রামনগর বিধানসভার বিজেপির প্রাক্তন কোর কমিটির সদস্য গৌতম জানা বলেন, দাদার অনুগামীদের হাতে দলের রাশ চলে গিয়েছে। প্রতিবাদ করার জায়গা নেই। প্রতিবাদ করলে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়। এসব দেখে দল ছেড়ে দিয়েছি। একটা জেলা কমিটিতে একটা বিধানসভা থেকে ১২জনের জায়গা দেওয়াটা নজিরবিহীন। এটা জেলা কমিটি নয়, এটা দক্ষিণ কাঁথি কমিটি। বিজেপির জেলা সভাপতি সোমনাথ রায় বলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কমিটি গঠন হয়েছে। এনিয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি।