সংবাদদাতা, বারুইপুর: অভিনব প্রতারণার কৌশল। বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসার পরিচয় দিয়ে গ্রাহককে ফোন করে প্রশ্ন, অনলাইনে কি বিদ্যুৎ বিল পেমেন্ট করেন? সেই বিলের পেমেন্ট কি আপডেট করেন? স্বাভাবিকভাবেই গ্রাহক এই প্রশ্নে বিব্রত বোধ করেন। তখন বলা হয়, আপনি একটা অ্যাপে যান। সেখানে গিয়ে দেখবেন আপডেট ইয়োর পেমেন্ট বলে একটা জায়গা আছে। সেখানে কাজ করতে অসুবিধা হলে হোয়াটসঅ্যাপে লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে। ওই লিঙ্কে ক্লিক করুন। গ্রাহক এতে আপত্তি জানালে তাঁকে ভয় দেখিয়ে বলা হচ্ছে, না হলে কিন্তু বাড়ির বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেওয়া হবে। এরপরে কোনও গ্রাহক ভয় পেয়ে লিঙ্কে ক্লিক করলেই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছে মোটা টাকা। আর কোনও গ্রাহক লিঙ্কে ক্লিক না করলে তাঁকে বারংবার ফোন করে লাইন কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রতারণার এই চক্র সক্রিয় বারুইপুর ও জয়নগরে। অনেক গ্রাহক এনিয়ে বারুইপুর বিদ্যুৎ দপ্তরে অভিযোগও জানিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিদ্যুৎ বিভাগের এক শীর্ষকর্তা বলেন, গ্রাহকদের সচেতন করে বলা হচ্ছে, কোনও লিঙ্কে ক্লিক করবেন না। বিদ্যুৎ অফিসে এসে সমস্যা জানাবেন। প্রয়োজনে থানায় গিয়ে ওই নম্বর দিয়ে অভিযোগ করুন।
ভুক্তভোগী বারুইপুরের এক গ্রাহক সন্দীপ বসু বলেন, ফোনে বিদ্যুৎ অফিসের অফিসার পরিচয় দিয়ে অনলাইনে পাঠানো বিদ্যুতের বিলের ‘পেমেন্ট আপডেট’ করতে বলা হচ্ছে। এজন্য প্রথমে ফোনে একটা অ্যাপ ইন্সটল করতে বলা হচ্ছে। তা করতে অসুবিধা হলে বলা হচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপ লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে; সেখানে গিয়ে জলদি ক্লিক করতে। এই বলে ভয় দেখানো হচ্ছে যে, শেষ বিদ্যুৎ বিলের পেমেন্ট জমা পড়েনি। দ্রুত ‘পেমেন্ট আপডেট’ না করলে বাড়ির লাইন কেটে নেওয়া হবে। আমি এটা প্রতারণা বুঝতে পেরে ওই ফোন নম্বর দ্রুত ব্লক করে দিই।
সন্দীপবাবুর প্রশ্ন, কী করে গ্রাহকের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর পেয়ে যাচ্ছে হ্যাকাররা? বারুইপুর বিদ্যুৎ অফিস থেকে জানা গেল, অনেকেই এই ব্যাপারে মৌখিক অভিযোগ জানাচ্ছেন। সূত্রের খবর, ওই লিঙ্কে ক্লিক করে কোনও গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ হাজার টাকা, কারও ১০ হাজার টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে। যদিও এই গ্রাহকরা পুলিসের দ্বারস্থ হননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জয়নগরের এক গ্রাহক বলেন, ফোনে নাম বলে জানানো হচ্ছে, অনলাইনে দেওয়া বিদ্যুৎ বিলের ‘পেমেন্ট আপডেট’ হয়নি। তাই লিঙ্কে ক্লিক করে তা আপডেট করতে বলা হচ্ছে। একবার ফোন কেটে দিলে রোজই ফোন করা হচ্ছে। অনেকে কিছু সন্দেহ না করে লিঙ্কে ক্লিক করে দিচ্ছেন। তারপরই দেখা যাচ্ছে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব।