• মেডিক্যাল চত্বরে দোকানের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত বদল
    আনন্দবাজার | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পিছু হঠলেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ক্যাম্পাসে থাকা অবৈধ দোকানগুলিকে স্থায়ী ভাবে এখানেই পুনর্বাসনের চেষ্টা চিকিৎসকদের বাধায় আটকে পড়েছে। ক্যাম্পাসে দেড়শোর বেশি অবৈধ দোকান রয়েছে। সেগুলিকে কোনও অবস্থাতেই যাতে স্থায়ী ভাবে মেডিক্যাল চত্বরে কারবার করতে দেওয়া না হয় সেই দাবিতে চিকিৎসকেরা সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তথা সুপারকে লিখিত ভাবে দাবি জানিয়েছেন। তা নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলেরও আপত্তি রয়েছে। প্রয়োজনে তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। এই পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত বদলে রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘ওই সমস্ত দোকানগুলিতে ক্যাম্পাসের বাইরে কাছাকাছি কোথাও পুনর্বাসন দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’’

    দোকানগুলির অস্থায়ী পরিকাঠামো আগে এক বার তুলে দেওয়া হলেও ফের সেগুলি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় বসতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ। বিভিন্ন বিভাগের সামনে, বিশেষ করে প্রসূতি বিভাগের কাছে সে সব রমরমিয়ে চলছে বলে অভিযোগ।

    ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তথা সুপার বলেন, ‘‘পুলিশকে জানানো হয়েছে। ক্যাম্পাসে ওই সমস্ত দোকান যাতে না থাকে তা দেখতে বলা হয়েছে।’’

    স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ সরকারকে নিয়ে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে যান মেয়র। সেখানে তিনি জানান, হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাছে এ ধরনের কোনও দোকান থাকবে না। তবে অস্থায়ী দোকানগুলিকে ক্যাম্পাসের মধ্যেই একধারে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। তা নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আধিকারিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়। বিধানসভা ভোট সামনে থাকায় রাজনৈতিক উদ্দেশে এ সব করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও বিজেপির মাটিগাড়ার বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ সরব হন।

    চিকিৎসকদের অনেকেই অধ্যক্ষ তথা সুপারকে তার প্রতিবাদে লিখিত ভাবে জানান। বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনে জানিয়ে কোনও ভাবেই যাতে ক্যাম্পাসে স্থায়ী ভাবে বসানোর পরিকল্পনা না করা হয়, সেই দাবিও ওঠে। সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা চাইছেন না ক্যাম্পাসে থাকা দোকানগুলিকে এখানে পুনর্বাসন দেওয়া হোক। তাই এখানে তা করার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে।’’

    উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসকদের তরফে উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাঙ্কের অধিকর্তা মৃদুময় দাস বলেন, ‘‘ওই সমস্ত অবৈধ দোকান ক্যাম্পাসে পাকাপাকি ভাবে বসতে দেওয়ার পক্ষে নন চিকিৎসকদের বেশিরভাগই। আমরা কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের হস্তক্ষেপও চেয়েছি। ’’

    তৃণমূলের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ জানান, চিকিৎসকদের আপত্তি দেখে অন্যত্র জায়গা দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের দাবি শুনেছি। ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে থাকা দোকানগুলিকে কাছাকাছি এলাকায় পুনর্বাসন দিতে জায়গা দেখা হচ্ছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)