শিক্ষক-সঙ্কটে জেরবার রাজ্যের বহু স্কুল। অনেক স্কুলে অনেক বিষয় পড়ানোর শিক্ষক নেই, এমন অভিযোগও ভুরিভুরি শোনা যায়। শিক্ষাকর্মী সঙ্কটের অভিযোগও আসে। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব বর্ধমানে এমন দু’টি স্কুলের সন্ধান মিলেছে, যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী থাকলেও নেই পডুয়া। স্কুল দু’টি বর্ধমান ১ এবং রায়না ২ ব্লকে বলে জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
বর্ধমান ১ ব্লকে কুড়মুন আপার প্রাইমারি স্কুল (গার্লস), কুড়মুন হাইস্কুল থেকে ১০০ মিটার দূরে বর্ধমান-নবদ্বীপ রোডের (ভায়া দেওয়ানদীঘি) ধারে অবস্থিত। আপার প্রাইমারি স্কুল ২০১৮-এ ভর্তি হয় দু’জন। ২০১৯-এ হয় এক জন। ২০২০-২০২৫ পর্যন্ত এখ জন পড়ুয়াও ভর্তি হয়নি। ২০২১ পর্যন্ত স্কুলে ৩ জন পড়ুয়া ছিল৷ তার পরে আর কেউ ভর্তি না হওয়ায় গত দু’বছর স্কুলে পড়ুয়া নেই। যদিও স্কুলে রয়েছেন এক জন টিচার ইন-চার্জ এবং এক জন শিক্ষাকর্মী। তাঁরা স্কুলে আসেন। সময় কাটিয়ে ফিরে যান। স্কুলের পরিকাঠামো যথেষ্ট ভাল। রয়েছে মজবুত ভবন, মাঠ এবং সম্পত্তি। এক সময়ে এখানে একটি শিশুদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুল চলত। সেটি অনেক দিন ধরেই বন্ধ।
স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘‘বিষয়টি লিখিত ভাবে জেলা স্কুল পরিদর্শককে জানানো হয়েছে। স্কুলে পড়ুয়া আনার চেষ্টা হয়েছিল। কুড়মুন হাই স্কুলের কিছু পড়ুয়াকে কুড়মুন আপার প্রাইমারি স্কুল (গার্লস) বিদ্যালয়ে পাঠানো নিয়ে আলোচনা করা হয়। কিন্তু, কাজের কাজ হয়নি।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশেই হাই স্কুল থাকায় পড়ুয়ারা আপার প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হতে চায় না। সকলেই চায়, যে স্কুলে তারা ভর্তি হবে, সেই স্কুল থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করবে।
একই অবস্থা রায়না ২ ব্লকের ৪ চক্রের উচালন গার্লস জুনিয়র হাই স্কুলেরও। ২০২৪ থেকে স্কুলে পড়ুয়া নেই। এখানে রয়েছেন এক জন পূর্ণ সময়ের শিক্ষিকা। কিন্তু নেই শিক্ষাকর্মী। এই স্কুলেও ভবন-সহ অন্য পরিকাঠামো রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অবর পরিদর্শক বিল্পব নন্দী বলেন, ‘‘২০২৪ থেকেই এই পরিস্থিতি চলছে। এক মাত্র শিক্ষিকাকে বদলির জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শক থেকে শুরু করে সব স্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দেবব্রত পাল বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে এসেছে। কী করণীয় তা নিয়ে আলোচনা হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘জেলায় আরও দু’-তিনটি স্কুলে একই সমস্যা ছিল। ওই সব স্কুল থেকে শিক্ষক এবং কর্মীদের অন্য স্কুলে বদলি করা হয়।’’