• সাধনার গড়া দেবীপ্রতিমা পূজিত হবে মণ্ডপে
    আনন্দবাজার | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • দীর্ঘ পনেরো বছর প্রতিমা গড়ে এলাকায় প্রশংসা কুড়িয়েছেন তেহট্টের গৃহবধূ সাধনা পন্ডিত। যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে, সেই কথার সার্থক রূপ দিয়েছেন তিনি। এই গৃহবধূর হাতেই গড়া প্রতিমা, মণ্ডপে পূজিত হয়।

    স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধনার পরিবারে কেউ কোনওদিন প্রতিমা শিল্পী ছিলেন না। তাঁর স্বামী সোমনাথ পণ্ডিত প্রতিমা শিল্পী। তাঁদের এক ছেলে পড়াশোনা করছে। বিয়ের আগে মূর্তি গড়ার কাজ সম্বন্ধে কিছুই জানতেন না সাধনা। স্বামীর কাজ দেখে তিনি নিজেই এখন এক জন সুদক্ষ প্রতিমা শিল্পী। এখন তাঁর হাতে গড়া বিভিন্ন রূপের প্রতিমাই এলাকার মণ্ডপে জায়গা করে নিয়েছে।

    সংসারের কাজ সামলে প্রতিমা গড়েন। সংসারের কাজ সামলেও অন্য বছরের তুলনায় এই বছর বরাত বেশি মিলেছে। এ ছাড়াও অনেক বারোয়ারি পুজোর বরাত ধরতে তুলনায় কম পয়সায় দুর্গা প্রতিমা গড়ছেন। গত কয়েক বছর আগেও তিনি ১৮টি দুর্গা প্রতিমা গড়ার বরাত ইপেতেন।

    এ বছর তিনি আপাতত পঁচিশটি প্রতিমা তৈরির বরাত পেয়েছেন। খরচ বাঁচাতে চৈত্র মাস থেকে প্রতিমা গড়ছেন। সাধনা বলেন, ‘‘তেইশ বছর বয়সে আমার বিয়ে হয়। বাবার বাড়ি তেহট্টের মণ্ডলপাড়ায়।

    বাবা ছোট্ট দোকান করে সংসার চালাতেন। সেই সময় সংসারের কাজ সামলে অবসরে স্বামীর মাটি দিয়ে মূর্তি গড়ার কাজ বসে বসে দেখতাম। পরে কাজের অনেক সময় সহযোগিতা করতে থাকি। তার পরে সেই থেকে এই কাজে হাতেখড়ি।”

    এখন পুরোদমে দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী, কালী সমস্ত প্রতিমা তৈরি করতে পারদর্শী সাধনা। বাঁশ ও কাঠের কাঠামো-সহ খড় বাঁধা মাটির প্রলেপ দেওয়া অবশেষে মূর্তির চক্ষুদান সমস্ত কাজই নিজে হাতে করেন। সারা বছরই কোনও না কোনও মূর্তির কাজ করতেই হয়। প্রতিমা গড়েই চলে সংসার। কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির ফলে লাভের অঙ্ক তলানিতে ঠেকেছে। পরিবেশ দূষণের কথা ভেবে ভেষজ রঙে মূর্তি গড়ার কাজ করেন। স্বামী সোমনাথ বলেন, “মূর্তি ও নিজে হাতেই তৈরি করে। অবসর সময়ে কখনও কখনও আমি নামমাত্র সাহায্য করি।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)