রাস্তার দু’পাশে নয়ানজুলিতে পাট পচার গন্ধ জানান দেয় পুজো এসে গিয়েছে। আর মুর্শিদাবাদের পাটের বাজারদরের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদের পুজোর বাজার। জেলার ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পাটের বাজারদর ভাল থাকলে পুজোর বাজারও ভাল হয়। তার কারণ মুর্শিদাবাদের অন্যতম অর্থকরী ফসল হল পাট। জেলার কৃষকেরা পাট বিক্রি করে ছেলে-মেয়ের পুজোর বাজার সারেন।
এ বছর পাটের দাম ভাল রয়েছে। পাটের দাম রয়েছে কুইন্টাল পিছু ৮০০০ থেকে ৮২০০ টাকা। ফলে পুজোর বাজার ভাল হবে বলে আশা করছেন মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ীরা। তবে জেলার কান্দি মহকুমা এবং বহরমপুর ব্লকের একাংশ এবারে বন্যার জলে প্লাবিত হয়েছিল। যার জেরে ওই এলাকায় মাঠের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই দিকে পুজোর কেনাকাটা এখনও সে ভাবে শুরু হয়নি। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের গ্রামেগঞ্জে গজিয়ে উঠেছে পোশাকের হাট। অনেকেই সেই সব হাট থেকে পুজোর পোশাক কিনে নিচ্ছেন। যার জেরে মার খাচ্ছেন মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ীরা। তবে বহরমপুরের বড় বড় দোকানগুলিতে বেচাকেনা ভালই হচ্ছে বলে ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা ঠিক মুর্শিদাবাদের পুজোর বাজার পাটের দামের উপরে অনেকটাই নির্ভর করে। পাটের দাম ভাল থাকলে পুজোর বাজারে বেচাকেনা ভাল হয়। এ বারেও পাটের বাজার দর খুব ভাল রয়েছে। আমরা আশাবাদী পুজোর বাজার জমবে।’’ তবে তাঁর দাবি, ‘‘পাটের বাজার দর ভাল হলেও এখনও জেলার বাজারগুলিতে সে ভাবে পুজোর বাজার জমে ওঠেনি। তার বেশ কয়েকটি কারণ আমাদের নজরে এসেছে। এখন বহু মানুষ অনলাইনে পোশাক-সহ নানা জিনিসপত্র কিনছেন। যার ফলে বহরমপুর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকার ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা মার খাচ্ছেন। সেই সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জুড়ে অনেক পোশাকের হাট গজিয়ে উঠেছে। সেগুলিতেও লোকজন পোশাক কিনতে যাচ্ছেন। তাতেও পুজোর বাজার মার খাচ্ছে। এ ছাড়া, কান্দি মহকুমা-সহ বহরমপুর, নবগ্রামের একাংশ বন্যা কবলিত হয়েছিল। ওই এলাকার পুজোর বাজারের অবস্থা আরও খারাপ। সেই সঙ্গে প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে লোকজনও বাজার কম বেরোচ্ছেন। তবে আমরা আশাবাদী সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে এ বারে পুজোর বাজার ভাল জমবে।’’
বহরমপুর ক্লথ মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘এ বারে পাটের দাম ভাল রয়েছে। অনেকের বেতনও হয়ে গিয়েছে। তবে সার্বিক ভাবে এখনও সে ভাবে পুজোর বাজার জমে ওঠেনি।’’