অতিক্রান্ত হয়েছে এক মাসেরও কিছু বেশি সময়। ডানকুনি খালের ধার থেকে খাটাল সরলেও এখনও পড়ে রয়েছে তার পরিকাঠামো। ফলে, দূষণ রোধে রয়েছে নানা প্রশ্ন। এ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে সোমবার মামলার শুনানি হয়। মামলাকারী সংস্থার আইনজীবী বিকাশ সাউ এ ব্যাপারে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। উচ্ছেদ হয়ে খাটালগুলি যেখানে বসেছে, সেখানে দূষণ রোধে ব্যবস্থা বা গোবর গ্যাসের প্লান্ট হয়েছে কি না, এ প্রশ্ন তোলেন। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি থেকে হলফনামা তলব করেছে আদালত। পরবর্তী শুনানি পুজোর পরে।
ডানকুনির পুরপ্রধান হাসিনা শবনম বলেন, ‘‘মাইকে ঘোষণা করা হয়েছে, উচ্ছেদ হওয়া কাঠামোর যাবতীয় জিনিস সরিয়ে নিতে। শুনেছি, খাটালের লোকেরা সেখান থেকে টালি ইত্যাদি বিক্রি করা শুরু করেছেন।’’ তিনি আরও জানান, সামগ্রিক পরিস্থিতি পুর-কর্তৃপক্ষ পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীকে জানিয়েছেন। ওই দফতরের তরফে সেচ দফতর এবং জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে খাল পরিষ্কার ও অন্যান্য কাজ নিয়ে। সম্প্রতি খালপাড়ে বৃক্ষরোপণ করা হয় দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে।
ডানকুনি খাল গঙ্গায় মিশেছে। সংস্কারের অভাবে এবং বিপুল পরিমাণ গোবরে খালটি ঢেকেছিল। দূষণের হাত থেকে খাল বাঁচাতে পরিবেশ আদালতে মামলা করে ‘তারকেশ্বর গ্রিন মেটস’ নামে একটি সংগঠন। আদালতের হস্তক্ষেপে বছর খানেক আগে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে খাল সংস্কার করা হয়। কিন্তু হাজার ছয়েক গরু-মোষের গোবর খালে ফেলা এবং খালেই তাদের স্নান বন্ধ করা যাচ্ছিল না। এর পরেই আদালতের নির্দেশে পুরসভার তরফে অভিযান চালিয়ে ১৫১টি খাটাল উচ্ছেদ করা হয় গত জুলাই মাসের শেষে। সোমবার আদালতে উচ্ছেদের কথা জানান সরকারের তরফে নিযুক্ত আইনজীবী।
সংস্কারের সময় খাল থেকে তোলা রাশি রাশি গোবর পাড়েই রাখা হয়েছিল। তার আগে ডানকুনি খাল-সহ সেখানকার জলাভূমি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট নানা দফতরকে নিয়ে পরিকল্পনার কথা হয়েছিল রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে বৈঠকে। সে সব হয়নি।
ডানকুনির ওই জলাভূমি রক্ষার আর্জিতে গত কয়েক বছরে সরকারি নানা দফতরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ অ্যাকাডেমি চিঠি দিয়েছে। অ্যাকাডেমির সভাপতি তথা প্রবীণ পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, বিপুল পরিমাণ গোবরেরজন্য খাল দূষিত হয়েছে। তাই খাটাল থেকে দূষণমূল্য আদায় করাউচিত। গ্রিন মেটস-এর যুগ্ম সম্পাদক শুভ্রকান্তি সমন্তের কথায়, ‘‘হুগলিতেই মিষ্টি প্রস্তুতকারী একটি সংস্থাডেয়ারি চালাচ্ছে দূষণ রোধে ব্যবস্থা নিয়ে। সর্বত্র খাটালে এই ব্যবস্থা কার্যকর করা দরকার।’’