আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়নি কোনও প্রাণী! গরমিল কেন্দ্রের তথ্যেই, উল্লেখ রাজ্যের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে
আনন্দবাজার | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে একটি প্রাণীও ‘নিখোঁজ’ হয়নি। কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের রিপোর্টেই ভুল তথ্য প্রকাশিত হওয়ায় এই গোল বেধেছে। বন দফতরের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে এমনই উল্লেখ করা হয়েছে।
আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে ৩২১টি প্রাণীর ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল বন দফতর। সম্প্রতি সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, রিপোর্টে কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের ভুলেরই উল্লেখ রয়েছে। ইতিমধ্যে ওই প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখেছেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
বন দফতর সূত্রে খবর, আলিপুরের চিড়িয়াখানা যে তথ্য কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছিল তাতে কোনও ভুল ছিল না। কেন্দ্রের রিপোর্টেই ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়, যা নাকি রাজ্যের তরফে সংশোধন করতেও বলা হয়েছিল। তবে তা করা হয়নি। এই রিপোর্ট স্বস্তি ফিরিয়েছে বন দফতরে।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। বলা হয়, আলিপুর চিড়িয়াখানায় ছিল ৬৭২টি প্রাণী। হঠাৎ হয়ে গেল ৩৫১! অর্থাৎ, বেমালুম ‘উবে’ গিয়েছে ৩২১টি। তারা গেল কোথায়? তা জানতে চেয়েই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। মামলাকারী সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ২০২৩-২০২৪ সালেও ৬৭২টি প্রাণী ছিল তবে ২০২৪-২০২৫ সালে তা হয়েছে ৩৫১। শুধু এই অর্থবর্ষেই নয়, এমন বেমালুম ‘উবে’ যাওয়ার ঘটনা নাকি চলছে ৩০ বছর ধরে! তাই কলকাতা হাই কোর্টের কাছে সংস্থার আবেদন, গত ১০ বছরের বিভিন্ন গরমিলের হিসাব তলব করুক আদালত। আলিপুর চিড়িয়াখানার নির্দেশককে বদলির পর এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে বন দফতর।
তবে এই তদন্ত রিপোর্ট প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ বনমন্ত্রী। বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “তদন্ত রিপোর্ট সন্তোষজনক। কারণ, চিড়িয়াখানা থেকে কোনও প্রাণী গায়েব হয়ে যাওয়ার প্রমাণ মেলেনি। তা ছাড়া দেশের যে কোনও চিড়িয়াখানায় কোনও পশু বা প্রাণী আনতে বা পাঠাতে গেলে ভারত সরকারের অধীন জ়ু অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার অনুমোদন নিতে হয়। তাই সরকারি ভাবে চিড়িয়াখানা থেকে প্রাণীদের অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে বন দফতর আরও কিছু পদক্ষেপ করে তবেই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানাবে।”
এ ছাড়া চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরীণ পরিচালনার পদ্ধতি নিয়েও বেশ কিছু বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। বন দফতরকে নজরদারি করে তা সংশোধনের সুপারিশও করেছে তদন্ত কমিটি।