স্টাফ রিপোর্টার: ট্রোলিং উড়িয়ে আগামীর মঞ্চপ্রস্তুতি নিতে শুরু করল অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যদের হুলি-গান-ইজম। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে ফের কয়েকটি বাংলা ব্যান্ডকে একত্রিত করে অনুষ্ঠান করাচ্ছে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা। সেখানেই ফের হুলিগানইজম-কে দেখা যাবে। বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য নিজে। ইতিমধ্যেই যা নিয়ে তুমুল কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
এরপর ‘মেলার গান’ আর তুমুল ভাইরাল হওয়া নিউ এডিশনের ঘোষেদের গান নিয়ে অনির্বাণরা পাড়ি দেবেন মার্কিন মুলুকে। হ্যাঁ, পুজোয় ট্রাম্পের দেশে ডাক পেয়েছে অনির্বাণ-দেবরাজদের ব্যান্ড। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে এই খবর জানিয়েছেন অনির্বাণ নিজেই। তবে বামেদের আগ্রাসী ট্রোলিং নিয়ে প্রশ্নে শুধু মুচকি হেসেছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, এগুলো সবই ‘ওষুধের সাইড এফেক্ট’! আসলে তিন ঘোষকে টেনে গান বেঁধে তুমুল ভাইরাল হয়েছে হুলিগানইজম। গত রবিবার বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণে অনির্বাণদের শো কার্যত বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তৃণমূলের কুণাল ঘোষ, বিজেপির দিলীপ ঘোষ ও সিপিএমের শতরূপ ঘোষকে নিয়ে ‘পলিটিক্যাল স্যাটায়ার’ ধর্মী গান নেটপাড়ায় কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছে। কুণাল ঘোষ হুলিগানইজমের প্রশংসা করেছেন। শুভেচ্ছা জানিয়ে গানের একটি অংশ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নিজের পেজ ও প্রোফাইল থেকে পোস্টও করেছেন। যা ইতিমধ্যেই তুমুল ভাইরাল। অনেকেই রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদের এই ‘স্পোর্টসম্যান স্পিরিট’-এর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। যদিও শতরূপপন্থীরা বেজায় চটেছেন। তঁারা নানা ইসু্য তুলে অনির্বাণকে আক্রমণ করেই চলেছেন। এর মধ্যেই আবার ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন অভিনেতা-নেতা রুদ্রনীল ঘোষ। সনাতনীদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে অনির্বাণকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন তিনি। সোশাল মিডিয়ায়
হুলিগানইজম’-এর গানের একটি ভিডিও পোস্ট করে বিজেপির রুদ্রনীল লিখেছেন, ‘বন্ধুবর অনির্বাণ ভট্টাচার্য, তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আপনার এই অসচেতন, জ্ঞানহীন বক্তব্যের। আপনি মঞ্চে বললেন, “সনাতন এসে গিয়েছে.. আর সনাতনী?..সনাতন মানে আমি সনাতন ধর্মের কথা বলছি…আসেনি তো এখনও? সনাতন ভারতে পৌঁছতে হলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে..সবাই এগিয়ে যায়.. আমরা পিছিয়ে যাব!” আপনি সজ্ঞানে বললেন এই কথা?’ অনির্বাণ কেন আর জি কর কাণ্ড, শিক্ষক পেটানো, শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে চুপ, বামেদের সুরে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রুদ্রনীল। যদিও নিন্দুকেরা অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাদের পর্যবেক্ষণ, রুদ্রনীলও ঘোষ। বিজেপির কোটায় দিলীপ ঘোষ গানে ঢুকে যাওয়ায় রুদ্র থেকে গিয়েছেন ব্রাত্য। তাই ভিতরে ভিতরে জ্বলুনি শুরু হয়েছে। রাজনীতির বাকি ঘোষরা কী তবে গানের অন্তর্ভুক্ত হতে না পেরে হতাশ? সুশান্ত ঘোষ, রুদ্রনীল ঘোষ, ভারতী ঘোষরা কী বলেন? প্রশ্ন তুলে জানার অপেক্ষায় নেটিজেনরা।
এই প্রথম নয়, এর আগেও অনির্বাণকে নিয়ে নেটপাড়া সরগরম হয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় তিনি চর্চিত তাঁর একটি যৌনদৃশ্যের ভিডিওর কারণে। ১৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও নিয়ে নেটপাড়ায় কম গুঞ্জন হয়নি। যা নিয়ে তুমুল বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন ছবির পরিচালক জয়রাজ ভট্টাচার্য ও অনির্বাণ নিজে। ঘনিষ্ঠ মহলে অনির্বাণ এখনও ওই পর্বে বামেদের আমোদিত হওয়ার কথা বারবার মনে করান। এবার শতরূপ ঘোষকে নিয়ে রসিকতা করায় বেজায় চটেছে বামপন্থীদের একাংশ। কিন্তু আসল সত্যটা হল প্রথমে এই গানে শুধু কুণাল ঘোষ ছিলেন। জি ডি বিড়লা সভাঘরে পরিবেশন করা গানে অন্তত তাই ছিল। পরবর্তীকালে আরও দুই ঘোষকে সংযোজিত করা হয়। আর এই অংশ নিয়েই দাবানালের আকার নিয়েছে বিতর্ক। অনির্বাণ নিজে সমাজমাধ্যমে সেভাবে না থাকলেও (শুধু এক্স হ্যান্ডলে আছেন) ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স হ্যান্ডলের বকুলতলা হুলিগানইজম-ময়। খবর সবই পাচ্ছেন তিনি। শতরূপপন্থীরা যে ট্রোলের ব্যাপারে সবচেয়ে অগ্রণী তাও দেখছেন। এই সংক্রান্ত একটা নেটে পোস্টার ভাইরালও হয়েছে। যেখানে অনির্বাণ বলছেন, ‘লিখলাম রেগে যাবে কুণাল ঘোষ। কিন্তু রেগে গেল মাকুরা।’ যদিও ‘সংবাদ প্রতিদিন’ এই পোস্টের সত্যতা যাচাই করেনি। জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক শত্রু, জনশত্রু, গণশত্রু বলে দাগিয়ে দিলেও পলিটিক্যাল স্যাটায়ার ধর্মী গান যে হুলিগানইজম চালিয়ে যাবে, ঘনিষ্ঠমহলে তা সাফ জানিয়েছেন অনির্বাণ। এই ‘মাস্তানি’-র জায়গা থেকেই ‘হুলি-গান-ইজম’-এর কাছে প্রত্যাশা বেড়েছে নেটিজেনদের।