নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: অবশেষে স্বাস্থ্য এবং জীবনবিমার প্রিমিয়াম জিএসটি মুক্ত হল। কমে যাচ্ছে ৩৩টি জীবনদায়ী ওষুধের দামও। ক্যান্সার চিকিৎসার খরচও কমছে। এসি, ফ্রিজ, মোবাইল, ল্যাপটপের দামও এবার এসে যাচ্ছে সাধারণের আওতায়। কমে যাচ্ছে বহু নিত্যপণ্যের দাম। আটা থেকে পাউরুটি, পনির থেকে ছোলা—নিত্যদিনের ব্যবহার্য বহু খাদ্যপণ্যের জিএসটি হচ্ছে শূন্য। এত বছর জটিলতার আবর্তে ঘুরতে থাকা জিএসটি কমল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করতেই। যা একক সংখ্যাগরিষ্ঠ মোদি সরকার সাত বছরে করতে পারেনি। নতুন স্ল্যাব ৫ শতাংশ, ১৮ শতাংশ এবং ৪০ শতাংশ কার্যকরও হচ্ছে দেবীপক্ষ পড়তেই। অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর। অর্থাৎ, পুজোর মুখেই দাম কমতে পারে টেক্সটাইল এবং রেডিমেড গার্মেন্টস, জুতো সহ অর্থনীতির ৮টি কোর সেক্টরের। বুধবার রাতে এভাবেই দ্বিতীয় জিএসটি যুগের সূচনা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এবার আর থাকছে না ১২ ও ২৮ শতাংশের জিএসটি স্তর। এই নয়া করকাঠামোর জেরে জিএসটি আদায় কমে যাবে ৪৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। যদিও বিজেপি বিরোধী রাজ্যগুলি যা মানতে নারাজ। বাংলা সহ ওই আটটি রাজ্যের দাবি, ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লক্ষ কোটি টাকায়। বাংলার অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, রাজ্যেরই ক্ষতি হবে ১০ হাজার কোটির।
জিএসটি কাউন্সিলের দু’দিনের বৈঠক শুরু হয় বুধবার দিল্লিতে। কিন্তু প্রথম দিনের শেষেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ৫ এবং ১৮ শতাংশ দু’টি স্ল্যাব থাকলেও, বিলাসদ্রব্য, তামাক, ৫০ লক্ষ টাকার বেশি মূল্যের গাড়ি সহ বিভিন্ন পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ কর আরোপ করা হবে। যাকে বলা হয় সিন ট্যাক্স। প্রায় ১৭৫টি পণ্যের দামে বড়সড় রেহাই মিলতে চলেছে। ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা মূল্যের জুতো ও রেডিমেড জামাকাপড়ের দাম কমবে। কিন্তু তার বেশি দামে চাপবে বাড়তি জিএসটি। প্যাথলজি ও রোগনির্ণয়ের কিটের জিএসটি কমানোর ঘোষণাও করেছেন নির্মলা।
সবথেকে বড় আগ্রহ যাকে ঘিরে ছিল, সেই স্বাস্থ্য ও জীবনবিমার সিদ্ধান্ত নিয়ে এল সাধারণ মানুষের জন্য বড়সড় স্বস্তি। কারণ ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি শূন্য হচ্ছে। চন্দ্রিমা বলেন, ‘প্রথম থেকে এই দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলে এসেছিলেন। সেটাই অবশেষে কেন্দ্র ও সব রাজ্য মানল। এদিকে বিরোধী রাজ্যগুলির সঙ্গে বুধবার অর্থমন্ত্রকের চলে তীব্র টানাপোড়েন। কারণ, বাংলা সহ তাবৎ বিরোধী রাজ্যের দাবি ছিল, সাধারণ মানুষকে রেহাই দেওয়া হোক, কিন্তু রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণও কেন্দ্রকেই দিতে হবে। অর্থমন্ত্রী জানান, ক্ষতিপূরণ নিয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে আর্থিক লোকসান কেন্দ্র ও রাজ্য দু’পক্ষেরই হবে।