একে পাঞ্জাবে রক্ষে নেই, এবার দিল্লিতে জারি বন্যা সতর্কতা
আজকাল | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: জলস্তর বেড়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে যমুনা নদী। দিল্লিতে বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
টানা বৃষ্টির জেরে যমুনার জলস্তর বেড়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ইতিমধ্যেই দিল্লির ময়ূর বিহার ফেজ–১ এলাকার নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত। ত্রাণশিবির গুলি জলের তোড়ে ভেসে গেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দিল্লির পুরনো রেল সেতু এলাকায় যমুনার জলস্তর রয়েছে বৃহস্পতিবার সকাল সাতটায় ২০৭.৪৮ মিটার। ভোর পাঁচটা বা ৬টার থেকে জলস্তর সকাল সাতটায় আরও বেড়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, রাত দুটো থেকে ভোর পাঁচটা অবধি জলস্তর ২০৭.৪৭ মিটারে স্থির ছিল। তারপর থেকেই জলস্তর বাড়ছে। টানা বৃষ্টির জেরে ইতিমধ্যেই রাজধানীতে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এতটাই বৃষ্টি হচ্ছে যে রাজধানীর সিভিল লাইনস এলাকায় গাড়ি পর্যন্ত ডুবে গেছে। একাধিক ভবনে জল ঢুকে গেছে। কাশ্মীরা গেট এলাকা পুরো জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
বুধবার বিকেলে ভারী বৃষ্টির জেরে দিল্লির একাধিক এলাকায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। যমুনা নদীর তীর সংলগ্ন এলাকার অবস্থা আরও খারাপ। বাড়িঘর ভেসে গিয়েছে প্রায়। এনডিআরএফ ইতিমধ্যেই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
এর মধ্যে আইএমডি জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি জারি থাকবে রাজধানী দিল্লিতে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা। বৃহস্পতিবার বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে দিল্লিতে। শুক্র ও শনিবারও পরিস্থিতি বদলের সম্ভাবনা নেই। তবে বৃষ্টির পরিমাণ একটু কমতে পারে। এদিকে, প্রতিবেশী পাঞ্জাবে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা অন্তত ৩৭। ১৯৮৮ সালের পর এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা যায়নি পাঞ্জাবে। ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। স্কুল–কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ৭ সেপ্টেম্বর অবধি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পাঞ্জাব সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই রিলিফ ফান্ড বাবদ ৭১ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, হরিয়ানার একাধিক অংশে বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু–কাশ্মীরেও ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এদিকে সমুদ্র উত্তাল থাকায় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গেও চলছে বৃষ্টি। দুর্গা পুজোর বাকি আর ২৩ দিন। তার আগে একের পর এক নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি থামছেই না বাংলায়। তবে কি এবার পুজো কাটবে মাথায় ছাতা নিয়ে? হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, সেপ্টেম্বরে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবার। জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে পূর্ব ভারতের দক্ষিণবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরবঙ্গ, সিকিম এই সমস্ত জায়গায় স্বাভাবিকের থেকে অধিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পুজোয় বৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, সাধারণত অক্টোবরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রাজ্যে সক্রিয় থাকে মৌসুমি বায়ু। এবারেও তেমনটাই থাকার সম্ভাবনা। ফলে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলতে পারে ততদিন। যদিও ষষ্ঠী থেকে দশমীর মধ্যে বৃষ্টি হবে কি না, সে পূর্বাভাস এত তাড়াতাড়ি দিতে পারছে না হাওয়া অফিস।