তুমুল ধসে বন্ধ জম্মু-রাজৌরি জাতীয় সড়ক! বিপর্যস্ত কাশ্মীরের যোগাযোগ ব্যবস্থা...
আজকাল | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় টানা ভারী বৃষ্টিপাত৷ এহেন বৃষ্টিপাতের ফলে জনজীবন চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রবল বর্ষণে একাধিক জায়গায় ভূমিধস দেখা দিয়েছে। এর ফলে যাতায়াত ব্যবস্থাও পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
চেনাব নদী প্রবল বেগে বইছে অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে। জম্মু জেলার রাজৌরি এলাকায় ভূমিধসের কারণে ট্রাফিক পুলিশ প্রায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। রাজৌরি ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মকর্তা বোধ রাজ জানিয়েছেন, 'রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আমরা সব গাড়ি থামিয়ে দিয়েছি। উপর থেকে আদেশ এলেই আমরা গাড়ি চলাচল আবারও শুরু করব। গতকাল থেকে আমরা এসব যানবাহন আটকে রেখেছি, কারণ বারবার ভূমিধস হচ্ছে। আমাদের আবেদন, যতক্ষণ না রাস্তা মেরামত হচ্ছে, ততক্ষণ কেউ ঘর থেকে না বেরোন।'
টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে রাজৌরি জেলার জম্মু-রাজৌরি জাতীয় সড়কও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রেক্ষিতে জম্মু ও কাশ্মীরের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল আজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এক সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, 'DSEJ/GEN/46208-46 তারিখ ০২-০৯-২০২৫ এর অফিস আদেশের ধারাবাহিকতায় এবং আবহাওয়া দপ্তর কর্তৃক জারি করা সতর্কতা ও টানা বৃষ্টি, ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা ও নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে জম্মু বিভাগের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল ০৫-০৯-২০২৫ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে যাতে ছাত্রছাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। শিক্ষা অব্যাহত রাখতে সম্ভব হলে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।'
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD) জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য ৭ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’ জারি করেছে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজ্যের কিছু কিছু এলাকায় অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। 'আজকের আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, হরিয়ানা ও চণ্ডীগড়ের কিছু জায়গায় এবং জম্মু ও কাশ্মীরের নির্দিষ্ট স্থানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে,' জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
পাশাপাশি, ভূমিধস, কাদামাটির ধস এবং পাহাড়ি অঞ্চলে পাথর গড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে দপ্তর। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা, নদী বা খালের ধারে এবং দুর্বল কাঠামোর আশেপাশে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
ভারী বর্ষণের ফলে ইতিমধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীরে ভূমিকম্প ও ভূমিধস ঘটেছে এবং একাধিক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিধসের কারণে শ্রীনগর–জম্মু জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে। সোমবার কঠুয়া–পাঠানকোট জাতীয় সড়কের ওপর একটি বড় সেতু ভেঙে পড়ে। ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। রবি নদী ও বিভিন্ন খালের জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঠুয়া জেলাতেও বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃষ্টির জেরে জম্মু শহরের একাধিক এলাকা পুরোপুরি জলমগ্ন।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই মেঘভাঙা বৃষ্টির পর মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে কিশ্তওয়াড়ে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি-বন্যায় প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৬০ জনের। তার মাঝেই ফের ভয়াবহ পরিস্তিতি জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায়। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, বন্যায় এখনও পর্যন্ত ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। আহত বহু। সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ছয়জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে কাঠুয়ার রাজবাগ এলাকার ঘাটি এবং আরও একাধিক গ্রামে প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। একটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।