সার্ভিস রিভলভার দিয়ে বাবা-মা'কে গুলি করে খুন, ভোরে ডিউটি থেকে ফিরেই যা করলেন রাজ্য পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর, শিউরে উঠছেন সকলে...
আজকাল | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাবা ও মাকে গুলি করে খুন করার পর আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা রাজ্য পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টরের। তিনি জঙ্গলমহল ব্যাটেলিয়নের ঝাড়গ্রাম জেলায় কর্মরত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। নাম জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়।
সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় ওই সাব ইন্সপেক্টরের মা শম্পা চট্টোপাধ্যায়(৫০) ও বাবা দেবব্রত চট্টোপাধ্যায়ের(৬২) হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে ডিউটি থেকে বাড়ি ফিরে নিজের সার্ভিস রিভালভার দিয়ে জয়দীপ প্রথমে নিজের বাবা ও মাকে গুলি করে খুন করার পর নিজের শরীরে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিকট শব্দ শুনে প্রতিবেশী ও বাড়ির মালিক ছুটে গিয়ে দেখেন বাড়ির ভেতর তিনজনই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।
তড়িঘড়ি রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদেরকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে জয়দীপের বাবা-মাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত বলে ঘোষণা করেন। জয়দীপের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানে আপাতত তাঁর চিকিৎসা চলছে বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়দীপ আসানসোলের বামুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অবিবাহিত। কর্মসূত্রে বাবা-মাকে নিয়ে ঝাড়গ্রাম পুলিশ লাইনের সামনে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে মানসিক অশান্তির কারণে তিনি বাবা-মাকে গুলি করে খুন করেছেন। এরপর নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন জয়দীপ। পুলিশ আরও জানিয়েছে ওই ভাড়াবাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।
পুলিশের একটি সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি নিয়েছিলেন জয়দীপ। পাশাপাশি এটাও জানা গিয়েছে, এরকম একটা ভয়ানক কাণ্ড ঘটালেও তিনি তাঁর বাবা ও মাকে খুবই ভালোআসন। সেইসঙ্গে এটা জানা গিয়েছে, জয়দীপের বাবা দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে সেই কারণেই কি মানসিকভাবে জয়দীপ ভেঙে পড়েছিলেন?প্রতিবেশীদের একটি সূত্র জানায়, অবিবাহিত জয়দীপ বাবা ও মাকে খুব ভালোবাসতেন। ফলে বাবা সেভাবে সুস্থ হয়ে উঠবেন না সেই চিন্তাই কি ঘুরপাক খাচ্ছিল তাঁর ভিতরে? যা তাঁকে শেষপর্যন্ত এরকম একটা ভয়ানক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল? যদিও তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন,জয়দীপরা ভাড়া থাকত। জয়দীপের বাবা মূক-বধির ছিলেন। তিনি কথা বলতে পারতেন না। এক বছরের বেশি সময় ধরে এখানেই ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন তাঁরা। জয়দীপের পরিবার কারুর সঙ্গে মেলামেশা করত না। সব সময় বাড়ির দরজা জানালা বন্ধ থাকতো। শুধু জয়দীপকে ডিউটিতে যাওয়া আসার সময় লোকেরা দেখতে পেতেন।