আজকাল ওয়েবডেস্ক: চুঁচুড়ায় হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ির একাংশ। যে রাস্তার উপরে বাড়ি ভেঙে পড়ে সেই রাস্তা দিয়ে অনেক মানুষ যাতায়াত করেন। তাই বড় দুর্ঘটনা করতে পারত।
কিন্তু তা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চুঁচুড়া বাজার চন্ডী বাবু লেনের পাশে একটি পুরনো বাড়ি রয়েছে। তার নীচে একটি লন্ড্রির দোকান আছে। অভিযোগ, বাড়িটি অনেকদিন ধরেই ভগ্নদশায় পড়ে রয়েছে। বাড়িটির একাংশে ভাড়াটেরা থাকেন। বাকি দোতলা বাড়ির পুরোটাই পরিত্যক্ত। যেকোনও সময় বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় স্থানীয় বাসিন্দারা পুরসভাকে এ কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুরসভা থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি ভেঙে পড়ার পর ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সমীর সরকার। ঘটনাস্থলে হাজির হয় চুঁচুড়া থানার পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ। গার্ডরেল দিয়ে রাস্তা ঘিরে দেওয়া হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর জানান, বাড়ির মালিককে নোটিশ পাঠিয়ে বাড়ির বাকি অংশ ভেঙে ফেলতে বলা হবে।স্থানীয়দের আশঙ্কা বাকি অংশ দ্রুত ভেঙে না ফেললে বড় কোনও বিপদ হতে পারে। স্থানীয়দের দাবি, টানা বৃষ্টির জেরে পুরনো বাড়ির দেওয়াল দুর্বল হয়ে পরেছে। তাই বৃহস্পতিবার আচমকা ভেঙে পড়ে দোতলা বাড়ির একাংশ।
প্রসঙ্গত, এক দিন আগেই বুধবার হাওড়ার ভেঙে পড়েছিল একটি বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ। এটা ঘটনা, বিপজ্জনক বাড়ি হিসেবে আগেই ঘোষণা করেছিল হাওড়া পুরসভা। তারপরেও ওই বাড়িতেই থাকছিলেন বাসিন্দারা। জরাজীর্ণ বাড়ির একাংশ বুধবার ভেঙে পড়ে। এছাড়াও মোটা লোহার বিম ভেঙে পড়ে একটি ঘরের মধ্যে। বরাতজোরে প্রাণে বেঁচে যান ঘরে থাকা বাসিন্দারা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছিল হাওড়া পুরসভা এলাকায়। ঘটনায় তুমুল আতঙ্ক ছড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে।
জানা গেছে, হাওড়া পুরসভার বৈষ্ণব মল্লিক লেনে প্রায় একশো বছরের পুরনো ছিল ওই তিনতলা বাড়ি। বহু বছর ধরেই ওই বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। জরাজীর্ণ ওই বাড়িটিকে অনেক আগেই ‘বিপজ্জনক’ বলে ঘোষণা করেছিল হাওড়া পুরসভা। বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরে যেতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও বাসিন্দারা ওই বাড়িতেই থাকছিলেন। অভাব বা অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকার কারণে কি ওইসব পরিবার ওই বাড়িতেই ছিল? সেই প্রশ্ন উঠেছে।
জানা যায়, বাড়ির মালিক–সহ আট–দশ ঘর ভাড়াটে পরিবার থাকত ওই বাড়িতে। বিপজ্জনক বাড়ি ঘোষণার পরেও মালিক ওই বাড়ি সারানোর কোনও চেষ্টাই করেননি বলে অভিযোগ। প্রতি বৃষ্টির মরশুমে বাড়ির পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে যেত বলে খবর। বর্ষাকালের বৃষ্টি চলছে এখনও রাজ্যজুড়ে। দিন কয়েক ধরে নিম্নচাপের বৃষ্টি চলছে হাওড়াতেও। এরই মধ্যে বুধবার সকালে ওই বাড়ির একটা অংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। দোতলার একটি ঘরের ভিতরের লোহার বিম ভেঙে পড়ে। ওই ঘরে তখন চার জন বাসিন্দা ছিলেন। কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে যান তাঁরা। বাড়ি ভেঙে পড়ার আতঙ্কে লোকজন রাস্তায় বেরিয়ে আসেন।ওই বাড়ির ভাড়াটিয়াদের বক্তব্য ছিল, তারা গরিব মানুষ। তাই কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলে বাড়িটি বিপজ্জনক হওয়া সত্ত্বেও ওখানে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছিলেন। তাঁদের কথায় প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক। বাসিন্দাদের কথায়, বছর তিনেক আগেও একইভাবে বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছিল। বারবার বাড়ির মালিককে বলা সত্ত্বেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চুঁচুড়ায় ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ির একাংশ।