মাটিতে বসেই চাটাই বৈঠক, পাড়ায় বসে সমস্যা শুনছেন জেলাশাসক
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচিতে জোরদার শিবির চলছে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে। জেলার বিভিন্ন ব্লকে ধারাবাহিকভাবে এই কর্মসূচিতে ভালো রকম সাড়া মিলছে বলে দাবি প্রশাসনের। আর ওই কর্মসূচিতে প্রতিটি শিবিরে সকল শ্রেণীর মানুষজনের ভিড় বাড়ছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হাজির হচ্ছেন জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকরা। কিন্তু এবার শিবিরগুলোতে গিয়ে সরাসরি সাধারণ মানুষের কথা শুনতে বিভিন্ন অঞ্চলে পরিদর্শন শুরু করলেন জেলাশাসক আয়েষা রানী এ। তিনি এখন অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসক-সহ অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে শিবিরগুলোতে হাজির হচ্ছেন। উদ্দেশ্য অভাব অভিযোগ সরাসরি শুনে সমাধানের ব্যবস্থা করা।
পরিদর্শন করতে গিয়ে জেলাশাসক আয়েষা রানী এদিন হাজির হন ভাতার ব্লকের ভোলানাথ চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিবিরে। সঙ্গে ছিলেন ভাতারের বিডিও দেবজ্যোতি দত্ত এবং বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস। শিবিরে পৌঁছে জেলাশাসক সকলের সঙ্গে মাটিতে বসে ‘চাটাই বৈঠক’ করেন। গ্রামবাসীরা সহজ সরল ভাষায় জেলাশাসকের কাছে তাঁদের যাবতীয় সমস্যার কথা তুলে ধরেন। একবারে ঘরোয়া পরিবেশে আলোচনা চলে। সকলকে তাঁদের এলাকার অভাব অভিযোগ নিয়ে বলার সুযোগ করে দেওয়া হয়। যা নিয়ে খুশি স্থানীয়রা। সূত্রের খবর, এলাকায় পানীয় জল, নিকাশি নালা, ঢালাই রাস্তা, গার্ডওয়াল নির্মানের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। জেলাশাসক জানান, সকলের কথা শোনা হয়েছে। ১০ লক্ষ টাকা করে বুথ পিছু বরাদ্দ আছে। তার মধ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করে দেওয়া হবে।
এখানেই শেষ নয়, জেলাশাসক এদিন দুয়ারে সরকার শিবিরে গিয়েও সকলের সঙ্গে কথা বলেন। জানতে চান কার কী সমস্যা আছে।জেলাশাসককে কাছে পেয়ে সকলেই তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন। জেলাশাসক দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে কন্যাশ্রী সদস্যদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন। তাঁদের নানা বিষয়ে সচেতন করার পাশাপাশি লেখাপড়ায় উৎসাহ দেন। একই সঙ্গে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গেও তিনি কথা বলে তাদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এদিকে জেলাশাসকের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম। তিনি বলেন, কেউ কোনোদিন ভাবতে পরেননি কোনও আধিকারিক এভাবে একসঙ্গে বসে তাঁদের অভাব, সমস্যার কথা শুনবেন। এর জন্য তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদানের কথা তুলে ধরেন। অন্যদিকে এলাকার উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে স্থানীয়রা এখানে একটি আধুনিকমানের হাট গড়ে তুলতে জেলাশাসকের কাছে দাবি রাখেন। জেলাশাসক দাবির কথা বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।