সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আড়াই মাস পর বিধানসভা নির্বাচন। জনমত সমীক্ষায় এনডিএ-র এগিয়ে থাকার ইঙ্গিতও মিলছে। তবু বিহার নিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারছে না এনডিএ শীর্ষ নেতৃত্ব। যার অন্যতম কারণ শরিকি বিবাদ। এনডিএ শিবিরে রীতিমতো দড়ি টানাটানি চলেছে আসন বণ্টন নিয়ে। ছোট ছোট শরিক দলের চাহিদা পূরণ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বিজেপি-জেডিইউ-কে।
২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে বিহারে এনডিএ শিবিরে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছিল ৭৪টি। জেডিইউ পেয়েছিল ৪৩টি। অর্থাৎ জেডিইউয়ের চেয়ে অনেকটাই বেশি আসন পায় গেরুয়া শিবির। তা সত্ত্বেও জোটের স্বার্থে নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি। এবারও এনডিএর মুখ সেই নীতীশই। তাঁর নেতৃত্বেই লড়বে বিজেপি। জেডিইউ বিজেপির চেয়ে নামমাত্র হলেও বেশি আসনে লড়বে। সমস্যা হল ছোট শরিকদের চাহিদা পূরণ। আগেরবার এনডিএ-র বাইরে থেকে আলাদা লড়েছিলেন চিরাগ পাসওয়ান। এবার তিনি জোটে। তাঁর দাবি অন্তত ৪০ আসন। যা না পেলে ফের আলাদা লড়াই করার হুমকি দিয়ে রেখেছেন তিনি। দাবি বাড়াচ্ছেন জিতন রাম মাঝিও। গত লোকসভায় তিনি গয়া থেকে জয়ী হয়েছেন। তাঁর দাবি, গয়া এবং ঔরঙ্গাবাদ জেলার সব আসন ছাড়তে হবে তাঁকে। দাবি বাড়াচ্ছেন উপেন্দ্র কুশওয়াহও।
সমস্যা হল, পাসওয়ান, মাঝি, কুশওয়াহ কাউকেই হাতছাড়া করতে পারবে না বিজেপি। গত লোকসভাতেও প্রায় ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন রামবিলাস পাসওয়ানের ছেলে। জিতন রাম মাঝি আবার বিহারের মুশাহার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। তাঁর বিশ্বাস জনসংখ্যায় যে পরিমাণ তাঁর ‘ভাগিদারী’ সেই পরিমাণ সম্মান তিনি পাচ্ছেন না। আবার উপেন্দ্র কুশওয়াহও কুর্মিদের মধ্যে জনপ্রিয়। ফলে কাউকেই হাতছাড়া করতে চাইছে না বিজেপি। সমস্যা হল, সবার দাবি রাখতে গেলে নিজেদের ভাঁড়ার শূন্য হওয়ার অবস্থা।
প্রাথমিকভাবে যে আসনরফার ফর্মুলা পাওয়া যাচ্ছে তাতে জেডিইউ ১০২-১০৩ আসনে লড়তে পারে। বিজেপি লড়তে পারে ১০১-১০২ আসনে। বাকি ৪০ আসন ভাগাভাগি হবে চিরাগ পাসওয়ানের এলজেপি, জিতন রাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা, এবং উপেন্দ্র কুশওয়ার আরএলএমের মধ্যে। এর মধ্যে ২৫ থেকে ২৮ আসন পেতে পারে চিরাগের দল। অর্থাৎ নীতীশকে বেশি আসন ছাড়তে গিয়ে চিরাগকেও অসন্তুষ্ট করতে চাইছে না গেরুয়া শিবির। বাকি আসনগুলি পাবে ছোট শরিকরা।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে চিরাগ পাসওয়ান বা জিতন রাম মাঝিরা সন্তুষ্ট নন। চিরাগ কোনওভাবেই ৩৫ আসনের নিচে নামতে রাজি নন। আবার মাঝিও ১০-এর কম মানতে চাইছেন না। কুশওয়াহর দাবি অন্তত ৭ আসন। কোন সমীকরণে এত চাহিদা পূরণ হবে, সেটাই এখন ভাবার বিষয় নীতীশ-মোদিদের।